যা যা পাল্টে দেবে ২০২১

ছবি : বিবিসি

টেক শহর কনটেন্ট কউন্সিলর : চলতি বছর অবসর কাটানোর জন্য মানুষ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর উপরই নির্ভরশীল ছিল। আগামী বছরও এই ধারা অব্যাহত থাকবে তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।

২০২১ সালে সোশ্যাল মিডিয়া, গেইমিং, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে তারই পূর্বাভাস নিচে দেওয়া হলো।

টেক জায়ান্ট

Techshohor Youtube

চলতি বছর থেকেই সরকারের নিয়ম নীতি গুগল, ফেইসবুক, অ্যামাজন, আলিবাবার জন্য কঠিন হতে শুরু করে। তাই ২০২১ সালে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য যে হুমকিতে পড়বে তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।

সম্প্রতি ফেইসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারক ও ৪৫ অঙ্গরাজ্যের বিচারকরা।

মামলায় অবৈধভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানকে কিনে নিয়ে প্রতিযোগিতা থামানোর অভিযোগ আনা হয় সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটির বিরুদ্ধে। আলিবাবার বিরুদ্ধেও ব্যবসায় একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার অভিযোগে তদন্ত করছে চীনের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্র্যাশন ফর মার্কেট রেগুলেশন (এসএএমআর)। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ভাষ্য, ক্রেতাদের তথ্য নেওয়ার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে অ্যামাজন। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বীরা কোনো সুযোগই পাচ্ছে না। অ্যান্টি ট্রাস্ট ল ভঙ্গের দায়ে গুগলের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ।

বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে টেক জায়ান্টগুলোর সম্পর্ক কেমন হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে ইতোমধ্যে টেক জায়ান্টগুলোর ক্ষমতা কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।

প্রযুক্তি বিশ্বেই বাণিজ্যযুদ্ধ

হুয়াওয়ে ও উইচ্যাট নিষিদ্ধ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। টিকটক মার্কিন ব্যবসার কিছু অংশ বিক্রি করে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়েছে। এসব নিষেধাজ্ঞা যে শুধু যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রিক তা নয়। ইউরোপেও ফাইভজি নেটওয়ার্ক স্থাপনের একের পর এক চুক্তি হাতছাড়া হচ্ছে হুয়াওয়ের। যুক্তরাষ্ট্রের চাপে পড়ে যুক্তরাজ্যে ও হুয়াওয়ের ফাইভজি স্থাপনের কাজ বাতিল হয়েছে।  সুইডিশ সরকারও হুয়াওয়ের সঙ্গে ফাইভজি স্থাপনের চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

চীনের কোনো কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে কিনা তা নিয়ে আগামী বছরই আলোচনা শুরু হবে। বাইডেন সরকার প্রযুক্তিকে ভূরাজনৈতিক ইস্যু হিসেবেই দেখছে। ফলে ট্রাম্প প্রশাসন বিদায় নিলেও বাণিজ্যযুদ্ধ থামছে না।

গেইমিং

লকডাউনে মাল্টিপ্লেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফরম্যাটের গেইমগুলো সবচেয়ে বেশি খেলা হয়েছে। মহামারি শুরু হওয়ার পর কল অব ডিউটি, পাবজি ও ফোর্টনাইটের মতো ব্যাটল র‍্যায়াল গেইমগুলো বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধাও গেইমগুলোকে আরও সহজলভ্য করেছে।

লাইভ স্ট্রিমিং গেইমিং প্ল্যাটফর্মগুলো এখন টেক জায়ান্টদের দখলে। অ্যামাজনের টুইচ, গুগলের স্টাডিয়া, অ্যাপলের আর্কেডে গেইম কিনে খেলার সুযোগ পাচ্ছে গেইমাররা। চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত সম্মিলিতভাবে ১২০ কোটি ডলার ব্যয় করেছেন মার্কিন গেইমাররা। সম্ভাবনাময় খাতটি আগামী বছরগুলোতে যে আরও বড় হয়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য।

সিনেমা

এককালে ছোট বড় সব রকম বাজেটের সিনেমাই মুক্তি পেতো সিনেমা হলে। এখন অংসখ্য ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। মহামারিতে সিনেমা হল বন্ধ থাকার কারণে বেশিরভাগ সিনেমাই মুক্তি পাচ্ছে নেটফ্লিক্স, এইচবিও ম্যাক্স, ডিজনি প্লাস বা অ্যামাজন প্রাইমে। বিশ্ব করোনাভাইরাস মুক্ত হয়ে গেলেও মানুষ আর হলমূখী হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ঘরে বসেই নতুন সিনেমা দেখার সুযোগ পেলে দর্শকরা হলে যাবে কেনো? ধারণা করা হচ্ছে, আগামীতে মেগা ফ্র্যাঞ্চাইজি সিনেমাগুলোই শুধু হলে মুক্তি পাবে।

অগমেন্টেড রিয়েলিটি

২০২৫ সালের মধ্যে অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাস মেইনস্ট্রিম প্রযুক্তি হয়ে উঠবে। ভার্চুয়াল সব তথ্য চশমার মধ্যে দেখার প্রথম সুযোগ দিয়েছিলো গুগল গ্লাস। কিন্তু গুগল গ্লাস জনপ্রিয়তা না পাওয়ায় অগমেন্টেড রিয়েলিটির উন্নয়ন থেমে যায়নি।

আগামী বছরই এ খাতে ১০ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করবে ফেইসবুক। অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাস চোখে দিলে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য স্মার্টফোনের আর প্রয়োজন পড়বে না। চোখের সামনেই ইন্টারনেটের সব তথ্য চলে আসবে।

বিবিসি অবলম্বনে এজেড/ ডিসেম্বর ২৯/২০২০/১১৪৮

আরও পড়ুন

কিনে নাও নয়তো ধ্বংস করো–কী খেয়াল ফেইসবুকের?

গুগল এবং ফেইসবুকের বিজ্ঞাপন আয় কমাতে নীতিমালা করছে যুক্তরাজ্য

যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হুয়াওয়েকে দেউলিয়া করা: রেন ঝেংফেই

লকডাউনে বেড়েছে ভিডিও স্ট্রিমিং ব্যবহার

করোনায় লকডাউনে গেইমিং কি ভালো হতে পারে?

*

*

আরও পড়ুন