![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : করোনাভাইরাস মহামারীতেও প্রযুক্তিকে ভর করে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি কীভবে এগিয়ে গেছে সেই সক্ষমতার জানান দিয়ে শেষ হলো এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড।
ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের এ প্রদর্শনী ভবিষ্যত প্রযুক্তি বিশ্বে নেতৃত্বের সামর্থ্যেকে জানান দিচ্ছে বলে বলছেন এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারী দেশী-বিদেশী নীতি-নির্ধারক ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ ফিল্ম অ্যান্ড আর্কাইভ মিলনায়তনে তিন দিনের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড এর বর্ণাঢ্য সমাপনী অনুষ্ঠান হয়।
এতে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমরা জানি গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশের বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যে অবস্থানে নিয়ে যেতে চান তা সম্ভব হবে আইসিটির কল্যাণে, ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে।’
তিনি বলেন, ‘এই ডিজিটাল মেলার মাধ্যম প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘আমাদের দাবায়া রাখতে পারবা না’। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখেছেন সেটি বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তবে এটিকে বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা।’
আয়োজন সাফল্যমন্ডিত হয়েছে উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান আরও বলেন, ‘এবারের আয়োজন ডিজিটালি করার কারণে আগের মেলার থেকে এটি অনেক বেশি সফল হয়েছে। বাংলাদেশ ডিজিটাল খাতে কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে সেটি শুধু বাংলাদেশকেই না বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রদর্শন করতে পেরেছি।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘এবারের আয়োজনের আগের তুলনায় ১০ ভাগের ১ ভাগ খরচ করে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার ১০ গুণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ লাখ দর্শনার্থীর কাছে পৌছানো। কিন্তু আমরা এক কোটির বেশি দর্শক, দর্শনার্থীর কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। আমাদের মোট রিচ আউট এক কোটি ৯৩ লাখ বলে তিনি উল্লেখ করেন।’
পলক আরও বলেন, ‘করোনার কারণে পরিবর্তিত পৃথিবী থেকে আমরা কী অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলাম এবং নিজেদের কিভাবে প্রস্তুত করলাম সেটি তুলে ধরতেই এবারের আয়োজন।’
‘শুধু একটা উদাহরণ দেই, চীনের পিপিই যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে লাখ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশের তরুণ ডিজিটাল মার্কেটাররা। শুধু একটি স্টার্টআপ সাড়ে ছয় লাখ ডলার আয় করেছে।’ বলছিলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে আমাজনের বিকল্প হবে ইভ্যালি। আলীবাবার বিকল্প হবে চালডাল, হোয়াটস অ্যাপের বিকল্প হবে আলাপন। এমন সব স্টার্টাপ বাংলাদেশ থেকেই গড়ে উঠবে। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তার সময়োপযোগী পদক্ষেপের মাধ্যমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’
অনুষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে বর্তমানে দেশের মানুষ প্রযুক্তি সকল সুবিধা ভোগ করছে। ১০ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। মোবাইল ব্যবহারকারী ১৬ কোটির বেশি। দেশের নিজেদের স্যাটেলাইট হয়েছে।
এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড এর প্লাটিনাম পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলো ইভ্যালি।
সমাপনী অনুষ্ঠানে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখতে উদ্বুদ্ধ হয়েছি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখে। উনি দেশকে যেভাবে উন্নয়নের শিখড়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেভাবে ইভ্যালিকে উন্নয়নের শিখড়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছি।’
‘ইভ্যালি এখন দেশের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্লাটফর্ম। আর এটা সম্ভব হতো না যদি না ডিজিটাল বাংলাদেশ না হতো। ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণেই আজকের ইভ্যালি দু’বছরে এই জায়গায় এসেছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বিশ্ব দরবারে অন্যতম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখছে ইভ্যালি।’ বলছিলেন রাসেল।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব এবং বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর।
এবারের এই আয়োজনে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অবদান রাখার জন্য ১৩টি ক্যাটাগরিতে ১৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়।