চীন: নজরদারীর মহাযজ্ঞে কেউই ক্যামেরার আড়ালে নেই

ছবি: ইন্টারনেট থেকে নেওয়া

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: চীনে ক্যামেরার সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। মানুষের উপর নজরদারীর মেগা প্রকল্প হিসেবে চীন দীর্ঘদিন ধরেই এসব ক্যামেরা স্থাপন করে চলছে। ২০১৮ সালে চীনে মোট ক্যামেরার সংখ্যা ছিলো ২০ কোটি। ২০২১ সাল নাগাদ এই সংখ্যা হতে পারে ৫৬ কোটির বেশি। অর্থাৎ, দেশটিতে গড়ে প্রতি তিন জন মানুষের উপর নজর রাখবে একটি ক্যামেরা।

চীন সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে এসব ক্যামেরা চীনের স্কাইনেট প্রকল্পের আওতায় স্থাপন করা হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে চীনের গণমানুষের মনে প্রাইভেসি নিয়ে চিন্তার সঞ্চার হচ্ছে।

কেউ কেউ ইউনিক পন্থায় প্রতিবাদও করছেন। তেমনই একজন হচ্ছেন ড্যাং ইউফ্যাং। পেশায় তিনি একজন ভাষ্কর। ২০১৮ সালে তিনি ইন্টারনেটের কালোবাজার থেকে তিন লাখ মানুষের ব্যাক্তিগত তথ্য কিনে সেটি প্রদর্শন করেন। লক্ষ্য ছিলো মানুষকে দেখানো যে তাদের তথ্য সরকারের কাছে সুরক্ষিত থাকছে না। সেগুলো চুরি হয়ে কালোবাজারে বিক্রয়ও হচ্ছে। প্রদর্শনী শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মাঝেই পুলিশ সেটি বন্ধ করে দেয় এবং তার বাসস্থানসহ আশপাশের এলাকায় ক্যামেরার সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়।

Techshohor Youtube

অদম্য ড্যাং এবছর আবার নতুন একটি উপায়ে মানুষদের সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। কয়েকজন স্বেচ্ছাসবককে নিয়ে তিনি চীনের হ্যাপিনেস অ্যাভিনিউর সবগুলো ক্যামেরাকে ধোকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কঠোর পরিকল্পনা ও মাত্রাতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বনে কেবল মুখটিই লুকাতে সক্ষম হন তারা।

ক্যামেরা থেকে মুখ লুকিয়ে ১.১ কিলোমিটারের হ্যাপিনেস অ্যাভিনিউ পার হতে তাদের সময় লাগে দুই ঘণ্টারও বেশি। কারণ এই এক কিলোমিটারের মধ্যে ক্যামেরার সংখ্যা ছিলো ৮৯টি। উপরন্তু, যেদিন তারা কাজটি করেন তার আগেরদিন রাতেও কয়েকটি নতুন ক্যামেরা বসানো হয়।

এদিকে, মাত্রাতিরিক্ত ক্যামেরা বসানোর কারণে চীনে পরিকল্পিত হত্যার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। চীনে খুনের হার এখন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ ভাগের এক ভাগ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন নিরাপত্তার নামে প্রতিটি মানুষের উপর নজরদারির একটি পদ্ধতি চীন সরকার তৈরি করে নিচ্ছে যা বিরুদ্ধমত দমনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ড্যাং তার পর্যবেক্ষণে দেখেছেন যে এমন সচেতনতামূলক পরীক্ষণের জন্য স্বেচ্ছাসেবক পাওয়া খুবই কষ্টকর। অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকদের পরিবার ও বন্ধবান্ধবরাও তাদের এই কাজের জন্য ব্যপক সমালোচনা করেন।

গত বছর নিউয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে জানা যায় চীনের ব্যাস্ত স্থানগুলোতে ফেসিয়াল রিকগনিশান ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। যা একজন মানুষের মুখ দেখেই বের করে ফেলতে পারে তার গাড়ির নাম্বার, ফোন নাম্বার ও সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট।

বিবিসি অবলম্বনে এমআর/নভে ২৫/২০২০/১৮০১

আরও পড়ুন –

করোনা নিয়ন্ত্রণ: বৈশ্বিক যাতায়াতে কিউআর কোড ব্যবহার করতে চায় চীন

প্রযুক্তি শিল্পে ভবিষ্যত কাণ্ডারী চীন!

১০,০০০ স্যাটেলাইট স্থাপনের পরিকল্পনা চীনের

চীনে করোনা রোধে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নজরদারী

*

*

আরও পড়ুন