প্রযুক্তি সচেতনতা: একটি ইমেইল কম পাঠিয়েও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভূমিকা রাখা যায়

ছবি: ইন্টারনেট থেকে নেওয়া

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: একটি ইমেইল কম পাঠিয়েও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভূমিকা রাখা যায়। সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে এমনটিই উঠে এসেছে।

সাধারণত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ‘ধন্যবাদ’ সূচক ছোট ছোট ইমেইল সেন্ড করে থাকেন। এসব ইমেইলের কারণে যে বিদ্যুৎশক্তি খরচ হয় তা স্বল্প হলেও উল্লেখযোগ্য। জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে এমন ছোট ছোট সচেতনতাও সামনের দিনগুলোতে কাজে আসতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে যুক্তরাজ্যের সবাই যদি দিনে একটি করে ইমেইল কম পাঠান তাহলে বায়ুমণ্ডলে বছরে ১৬ হাজার ৪৩৩ টন কার্বন কম নিঃসরিত হবে। যা ইউরোপের হাজার হাজার ফ্লাইটের সমান।

Techshohor Youtube

কেন একটি ইমেইল কম পাঠিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভূমিকা রাখা যায়? কারণ একটি ইমেইল পাঠাতে করতে পুরো ইন্টারনেট সিস্টেমের একটু একটু করে শক্তি খরচ হয়। শুরু হয়, প্রেরকের ডিভাইস থেকে, এরপর আইএসপির বিভিন্ন সুইচের বিদ্যুৎ খরচ, ডেটাবেইজের বিদ্যুৎ খরচ এবং প্রাপকের ডিভাইসের বিদ্যুৎ খরচ মিলিয়ে এটি উল্লেখযোগ্য হয়ে দাঁড়ায়।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ছোট বিষয়ের দিকে মনোযোগ না দিয়ে বড় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের দিকে নজর দেওয়া উচিত। কারণ, ইমেইল কম পাঠালে যুক্তরাজ্যে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ কমবে তা মোট নিঃসরণের মাত্র .০০৩৭ শতাংশ। সেই সঙ্গে যদি হিসাব করা হয় তাহলে এসব ডিভাইস সবসময় চালুই থাকছে তাই না পাঠালেও সাশ্রয় যতটা ভাবা হচ্ছে ততটা হবে না।

ডিজিটাল যুগে ডিভাইসের সবচেয়ে বেশি শক্ত খরচ হয় গেমিং এবং ভিডিও দেখায়। মোবাইল ইন্টারনেটের জেনারেশান বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে ডিভাইসের শক্তি খরচ। কয়েক বছরের ব্যবধানে স্মার্টফোন ও অন্যান্য মোবাইল ডিভাইসের ব্যাটারির আকার বেড়েছে দ্বিগুন থেকে তিনগুন। এই শক্তি পরোক্ষভাবে জলবায়ু পরিবর্তনেই ভূমিকা রাখছে। তাই সচেতন ও বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহার নিশ্চিত করে সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

এদিকে, বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো যেমন, গুগল ও অ্যাপল সাধারণত কার্বন জিরো হিসেবে নিজেদের পরিচালিত করে। বায়ুমণ্ডলে তারা বছরে যে পরিমান কার্বন নিঃসরণ করে সেটি পরিষ্কার করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয় তা বিজ্ঞান গবেষণা প্রকল্পগুলোতে তারা দিয়ে থাকেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যদি মানুষ নিজেদের ‘ইকো-গিল্ট’ বা পরিবেশের প্রতি অপরাধবোধের প্রায়শ্চিত্ত করতে চান তাহলে ডিভাইস কম বা প্রয়োজন মাফিক ব্যবহার করলেই তা সম্ভব হবে। প্রয়োজনহীনভাবে বাতি না জ্বালিয়ে রাখলে, অপ্রয়োজনের সময়ে কম্পিইটার বা ল্যাপটপ বন্ধ রাখলে অনেক শক্তি সাশ্রয় সম্ভব হবে। একটি ইমেইলের প্রভাব আসলে এই বিষয়টিই মানুষের সামনে পরিষ্কার করে তোলে। যদি সবাই মিলে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হওয়া যায় তাহলে কেবল আর্থিক লাভই হবে না সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন রোধেও ভূমিকা রাখা যাবে।

এরপর বিদ্যুৎ অপচয় চোখে পড়লেই সেটি বন্ধ করাটাই বুদ্ধিদীপ্ত কাজ হবে। কারণ, ওই অপচয় রোধ করলে কিছুটা কার্বন কম নিঃসরিত হবে বায়ুমণ্ডলে। জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে এমন ছোট ছোট সার্বিক সচেতনতা খুবই জরুরী বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বিবিসি অবলম্বনে এমআর/নভে ২২/২০২০/১২৪৪

আরও পড়ুন

জলবায়ু রক্ষায় অভিনব উদ্যোগ

৪০ বছরের মধ্যে কার্বন-জিরো হবে চীন, কীভাবে?

কার্বন নিঃসরণ কমাতে ক্লাইমেট ক্লক তৈরি

সোলার পাওয়ারে কমছে কয়লার দাপট

*

*

আরও পড়ুন