![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : বৈশ্বিক মহামারির প্রভাব থেকে কিছুটা মুক্ত থাকলেও ভারতীয় স্টার্টআপগুলো এখন নতুন এক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সেটা ভারত ও চীনের মধ্যে সামরিক অবস্থান।
গত জুনে ভারতের হিমালয় অঞ্চলের লাদাখ সীমান্তে ভারত-চীনের সৈন্যদের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহতের পর দেশটির পক্ষ থেকে নেয়া অর্থনৈতিক প্রতিরোধ অনেকটাই আক্রমণাত্মক ছিল। কোনো পক্ষই সংঘর্ষের দায় না নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে, ফলে উত্তেজনা বেড়ে যায় দেশ দুটির মধ্যে।
কিন্তু ভারতের শীর্ষস্থানীয় ৩০ প্রযুক্তির প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮টিতেই রয়েছে চীনের বড় ধরনের বিনিয়োগ। যা সেসব কোম্পানির মূল্যমান টাকার অঙ্কে শতকোটি মার্কিন ডলারের বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে খাবার ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান, ট্যাক্সি বা রাইড শেয়ারিং, হোটেল চেইন এবং ই-লার্নিংয়ের মতো প্রতিষ্ঠান।
সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ ভাগ্য কি হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। কেননা সেগুলোতে ভবিষ্যতে চীনা বিনিয়োগ আসবে কিনা সে বিষয়টিও অনিশ্চিত।
দেশটির অন্যতম বেসরকারি ইক্যুইটি ফার্ম ট্রু নর্থের পার্টনার হারেশ চাওলা বলছেন, ‘স্পষ্ট করে এটা বলতে পারি যে, স্টার্টআপে বিনিয়োগের বড় একটা উৎস ধ্বংস হয়ে গেলো।’
‘এই ইকোসিস্টেম নিঃশব্দে শেষ হবে অর্থের ধীর সংস্থান আসার কারণে। বিশেষ করে তারা (চীন) মোবাইল এবং গ্রাহককেন্দ্রিক বাজার তৈরিতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে’-বলেন তিনি।
ইতোমধ্যে দিল্লি দুই শতাধিক চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে। যার মধ্যে দেশটিতে তুমুল জনপ্রিয় টিকটক, পাবজি রয়েছে। একই সঙ্গে এটি হাইওয়ে প্রজেক্ট ও ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগে চীনের বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করেছে। চীনকে বয়কটের ডাকও উঠেছে জোরেশোরে।
গত এপ্রিলেই অবশ্য ভারত সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা কঠোর করেছে। যাতে মহামারির এই সময়ে হঠাৎই কোনো প্রতিষ্ঠান অন্য কোনো ছোট প্রতিষ্ঠানকে কিনে নিতে না পারে।
কিন্তু এর প্রভাব পড়েছে ভারতের বিনিয়োগ স্টার্টআপগুলোতে যারা বিদেশি বিনিয়োগ চাইছিল।
এক দশক আগেই ভারতে চীনা বিনিয়োগ ছিল একেবারে নগণ্য। তবে স্টার্ট-আপ গবেষণা সংস্থা ট্র্যাকসনের হিসাবে ২০১০ সাল থেকে ভারতে চীনের ৩৫টি কর্পোরেশন এবং ৮৫টি অন্য ইক্যুইটি প্রতিষ্ঠান ভারতে পেটিএম, স্ন্যাপডিল এবং সুইগিসহ আরও প্রতিষ্ঠানে ৪০০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।
আর এই সময়ে ভারতে চীনের সরাসরি বিনিয়োগ আগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আগে যেখানে ৫ শতাংশ ছিল এই সময়ে তা বেড়ে হয়েছে ১১ শতাংশ।
এমনকি এখন ভারত সিল্করুট রোড প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি মাল্টি বেল্ট প্রকল্প থেকে চীনের সঙ্গে থাকতে চাইছে না।
চাওলা মনে করেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে প্রাথমিক ধাপের যেসব বিনিয়োগ সেগুলোতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। একটা সময় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলোই বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়বে।’
চীনা আলিবাবা, টেনসেন্ট, বাইদু সম্প্রতি ভারতে তাদের বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন আর এই পরিস্থিতিতে আর ভারতে বিনিয়োগ করতে চায় না।
তবে বিষয়টিকে ‘সংবেদনশীল’ হিসেবে উল্লেখ করে ভারতের বড় স্টার্টআপগুলো কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বিবিসি অবলম্বনে ইএইচ/সেপ্টে১০/২০২০/২০১০
আরও পড়ুন –
ভারতে প্রতি চার ফোনের তিনটিই চীনা!
চীনা টিকটক বর্জন করবে ভারতীয়রা?