‘আইন ভাঙিনি, ক্রেতা-বিক্রেতার ভালোর জন্য ইভ্যালি’

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ব্যবসায় কোনো আইন না ভেঙ্গে ক্রেতা-বিক্রেতার ভালোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল।

বৃহস্পতিবার বিকালে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘যতটুকু আইন আমার জানা আছে এবং আইনজীবীদের কাছ থেকে যে গাইডলাইন পেয়েছি তা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশের কোনো আইনের কোনো ধারা ভঙ্গ করে আমরা ব্যবসা করছি না।”

‘যা কিছু করেছি সেই শুরু থেকে তা গ্রাহকের ভাল চিন্তা করে, গ্রাহকের জন্যই করেছি’ বলেন তিনি। 

Techshohor Youtube

গ্রাহকের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে সব বাধা পেরিয়ে ই-কমার্স খাতে ইভ্যালি এক নম্বর অবস্থান ধরে রাখবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও। 

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ইভ্যালি সিইও বলেন, গ্রাহকের কাছে যে ২১ লাখ প্রোডাক্ট ডেলিভারি হয়েছে তাতে কেউ হয়তো কম প্রাইসে কিনেছেন, কিছু প্রডাক্টে বেশি কিনেছেন কিন্তু বাজারমূল্য হতে কম প্রাইসে কিনেছেন।

‘আমাদের ব্যবসায়িক গ্যাপ যেহেতু নাই, আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে জোর গলায় দাবি করি যে, আমাদের অনেস্টির কোনো ঘাটতি নেই। ব্যবসা যারা করেন তাদের এমন ধাক্কা সামাল দিতে হয়েছিল। অ্যামজন, ফেইসবুক, ইলন মাস্কের কোম্পানির ক্ষেত্রেও। এমনকি আমাদের দেশীয় অনেক কোম্পানিকেও ধাক্কা খেতে হয়েছিল, হয়তো তারা এভাবে সরাসরি গ্রাহকের সঙ্গে লিংকড ছিলেন না। এই ধাক্কাগুলো কখনই ওই বিজনেসকে পিছিয়ে দেয়নি বরং গতি বাড়িয়ে দিয়েছিল কারণ এর মাধ্যমে রেক্টিফিকেশনের জায়গাটা অনেক স্মুথ হয়’ বলছিলেন তিনি।

গ্রাহককে ইভ্যালির উপর আস্থা রাখার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সব ধরনের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থা তিনি নিয়ে রেখেছেন। তিনি চরমভাবে আশাবাদী যে শিগগিরই  সবগুলো ব্যাংক অ্যাকাউন্ড খুলে দেয়া হবে, গ্রিন সিগনাল তারা পাবেন।

গ্রাহকরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হবেন না বলে নিশ্চয়তা দেন মোহাম্মদ রাসেল।

এক প্রশ্নের জবাবে ইভ্যালি সিইও বলেন, ‘মনে হচ্ছে মনে করে বলা হচ্ছে এমএলএম। যারা বলছেন তারা ভাবছেন এত ফাস্ট একটা বিজনেস এমএলএম ছাড়া সম্ভব না।

‘অথচ ইভ্যালির পুরো প্রক্রিয়ায় এমএলএমের সঙ্গে কোনো ধরণের কানেক্টিভিটির সুযোগই নেই। আমাদের কোনো কিছু না দেখে, সেলারদের সঙ্গে আমাদের এগ্রিমেন্ট স্ট্রেন্থ না দেখে এটা একদমই ধারনাপ্রসূত বলা হচ্ছে। মাল্টিলেবেল মার্কেটিংয়ের কোনো কিছুর সঙ্গে ইভ্যালির কোনো কিছুর মিল নেই’ উল্লেখ করেন তিনি।

অ্যামাজান, আলীবাবা, ফ্লিপকার্ট, লাজার্ডসহ  বিশ্বের খ্যাতনামা ই-কমার্সের বিজনেস মডেল যা ইভ্যালিরও তা। বাংলাদেশের কোনো কোম্পানি বিদেশের কোনো কোম্পানিকে এভাবে বিট দিতে পারেনি।  আমি প্রতিযোগিতা করেই টিকে থাকতে চাই, বলছিলেন রাসেল।

তিনি বলেন, ‘ইভ্যালির বিজনেস মডেলের সবচেয়ে সেন্সেটিভ পার্ট হলো এখানে ভোক্তা ও ক্রেতার সমাগম করা। আমাদের স্টাডি বলে এই জায়গায় সমাগম করতে পারা কোম্পানি সফল হয়েছে এবং যারা পারেনি তারা ব্যর্থ হয়েছে। এই সমাগমটা সহজ ছিল না। ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কে খুশি রেখে এবং আমাদের প্রসেস উন্নয়নের মাধ্যমে এটা এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই ক্রেতা এবং বিক্রেতা সমাগম করতে আমাদের বিজনেস মডেলের কিছু পরিবর্তন বা ইনোভেশন আনা হচ্ছে। হয়তো এই জায়গায় অনেকে ধরে নিয়েছেন আমরা একইভাবে সারা জীবন চলবো। আমাদের এখানে অবশ্যই একটা ব্যবসায়িক লক্ষ্য ছিল।

‘আমরা বিক্রেতা বা প্রস্তুতকারক থেকে সর্বোচ্চ কমিশন নিয়ে ক্রেতাকে সর্বোচ্চ ছাড় দেই। কিছু পণ্যে লস করে অন্য পণ্য দিয়ে তা পুসিয়ে নেওয়া, এরকম কিছু স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেছি। এটা একটা বিজনেস মডেল। আপনারা দেখবেন ক্রেতা ও বিক্রেতা সমাগম অধিক হলে সার্ভিস হয়তো ১০০% ঠিকমত দেওয়া যায় না। কিন্তু আমরা থেমে থাকিনি, আমাদের কর্মী ৫ জন থেকে এখন ৭০০ জন। আমাদের রেজিস্টার্ড ১৫ হাজার ডেলিভারি হিরো প্রতিনিয়ত কাজ করছে  ’ বলছিলেন ইভ্যালি সিইও।

ইভ্যালি। ছবি : সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলেনে জানানো হয়, করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সারা বাংলাদেশের জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ে ২০০০ এর বেশি ইভ্যালি এক্সপ্রেস গ্রোসারি শপ ও  ৭৫০ এর বেশি ফার্মেসি কাজ করেছে। যাদের মাধ্যমে মানুষের দোরগোড়ায় তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ১ হতে ৩৬ ঘন্টা এবং ঢাকায় ৫০০০ ইভ্যালি ডেলিভারি হিরোর মাধ্যমে ১ ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে যেমন সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকতে উৎসাহ দেয়া হয়েছে ২৭৫০ এর বেশি সেলারকে দুর্যোগকালীন সময়ে আয়ের উৎস সচল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে।

চলতি বছরেই ইভ্যালির কর্মী সংখ্যা ২০০০ এবং আগামী ৫ বছরে ২ লাখ কর্মীর একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার আশাবাদ জানানো হয়।

বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়ে বলা হয়, যে পদ্ধতিতে ভ্যালুয়েশন করা হয় সেই পদ্ধতিতে হিসেব করলে কনজারভেটিভ ওয়েতে ইভ্যালির গ্রুপ ভ্যালু মিনিমাম ৫০০ মিলিয়ন বা ৪০০০ কোটি টাকার বেশি। যদিও এটা ইভ্যালির ইন্টারনাল পদ্ধতি যা স্ট্যান্ডার্ড ওয়েতে ক্যালকুলেটেড।

এডি/২০২০/সেপ্টেম্বর৩/১৯৫০

আরও পড়ুন 

ইভ্যালির ব্যবসা পর্যালোচনা করতে ই-ক্যাবের কমিটি

ইভ্যালির ক্যাশ অন ডেলিভারিতে গ্রাহকদের সাড়া

ইভ্যালির অ্যাকাউন্ট ৩০ দিন স্থগিত, বিস্তারিত চেয়ে চিঠি

ইভ্যালি অফিসে অ্যামাজন কর্মকর্তা

*

*

আরও পড়ুন