![]() |
করোনায় অনেক খাতের মতো চ্যালেঞ্জে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং খাতও। চ্যালেঞ্জে উতরে এগিয়ে যাওয়ার ভাবনা নিয়ে টেকশহরের মুখোমুখি হয়েছেন এ খাতের সংগঠন বাক্যে’র সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন। সাক্ষাতকার নিয়েছেন আল-আমীন দেওয়ান।
টেক শহর : করোনা পরিস্থিতিতে গত চার মাসে এ খাতের উদ্যোক্তারা কতটুকু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ?
তৌহিদ হোসেন : বাংলাদেশে আগে যা দুর্যোগ হয়েছে তা অভ্যন্তরীণ দুর্যোগ কিন্তু করোনার প্রভাবে বহিঃবিশ্বের সবগুলো দেশই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিপিও সেক্টরের অভ্যন্তরীণ বাজারের ৫০ শতাংশের বেশি কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারের ক্লায়েন্ট করোনার জন্য খুব বাজে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
টেক শহর : গত চার মাসে বিপিও খাতনির্ভর কর্মসংস্থান হারিয়েছে কত মানুষ ?
তৌহিদ হোসেন : এখন পর্যন্ত বিপিও কোম্পানিগুলো তাদের ছাঁটাই তেমনভাবে করেনি কিন্তু বর্তমান অবস্থা যদি আরও বিদ্যমান হয় তাহলে সামনে অনেক লোক ছাঁটাইয়ের মুখে পড়বে।
টেক শহর : ক্ষতি সামলাতে সরকারের কাছে প্রণোদনাসহ যেসব আর্থিক সহায়তা চেয়েছিলেন তার কতোখানি পেয়েছেন ?
তৌহিদ হোসেন : সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে কিন্তু আসলে সেটা স্বল্প সুদে লোন দেওয়া। যদি কাজ না থাকে, লোন নিলে সেটা তো আসলে পরিশোধ করার ব্যবস্থা তো থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাক্য থেকে প্রাইম ব্যাংক এবং আইপিডিসির সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে যেখানে কোলাটেরাল ছাড়া বাক্য মেম্বারদেরকে লোন দেওয়া যাবে।
টেক শহর : উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তা পর্যায়ে সর্বোপরি খাতটির জন্য কোনো ‘ সারভাইভিং মডেল’ বা ‘ কর্ম পরিকল্পনা’ নিয়েছেন ?
তৌহিদ হোসেন : সবাই চেষ্টা করছে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারভাইভ করার, কারণ আমরা আশাবাদী যদি ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যক্রম করতে পারি তাহলে আউটসোর্সিং খাতে আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। আমরা দেখছি বর্তমান অবস্থায় ইন্টারনেটনির্ভর সার্ভিসগুলোতে মানুষ বেশি আরও ডিপেন্ডেন্ট হয়েছে।
টেক শহর : সর্বশেষ বিপিও সামিটে উপস্থাপিত হিসেবে ২০১৭ সালের পরের বছরগুলোতে খাতটিতে কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্বি বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। আয়ের পরিমানও ২০১২ সাল হতে দ্বিগুণ হারে বাড়ছে।
বর্তমান পরিস্থিতে ২০২১ সালের মধ্যে আপনাদের যে লক্ষ্য, বিলিয়ন ডলার আয় ও লাখো কর্মসংস্থান- তা অর্জন সম্ভব ? না হলে নতুন লক্ষমাত্রা বা সময় নির্ধারণ করেছেন ?
তৌহিদ হোসেন : এখন আমরা ৪০০ মিলিয়ন ডলারের মতো বাৎসরিক আয় করছি। নতুনভাবে আমরা চিন্তা করছি ২০২৫ সালের আগে এক বিলিয়ন ডলার টার্নওভার এবং এক লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান করতে পারব।
টেক শহর : দেশের বিপিও বা বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং খাত কলসেন্টার নির্ভরতা’ হতে কতটুকু বেরিয়ে এসেছে ? দেশে খাতটির বর্তমান কর্মপরিধি কোথায় দাঁড়িয়েছে ?
তৌহিদ হোসেন : বিপিও সেক্টরে হাজার কাজের মধ্যে একটা হচ্ছে কলসেন্টার। শুরুতে কল সেন্টারের ওপরে বাংলাদেশে কাজ বেশি হলেও এখন কলসেন্টারের পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিং, মেডিকেল স্ক্রাইব, লিগ্যাল প্রসেস আউটসোর্সিং, ফিন্যান্সিয়াল প্রসেস আউটসোর্সিং, ব্যাক অফিসসহ অনেক রকম কাজ হচ্ছে।
টেক শহর : এই যে নিউ নরমাল পৃথিবী, এই সময়ে বিপিও খাতে নতুন সম্ভাবনা কী দেখছেন ?
তৌহিদ হোসেন : কিছু কিছু খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে কিন্তু অধিকাংশ খাতে কর্মসংস্থান কমেছে। আমরা আশাবাদী আগামী বছর থেকে আরও ইন্টারনেটনির্ভর অনেক সেবা বাড়বে এবং বিপিও সেক্টরের কাজও নতুন করে তৈরি হবে।