![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : খুব বেশি দিন আগের নয়, যখন গেইম বলতে শুধুই শিশুদের খেলা ছিল। আর ভিডিও গেইম খেলে আয় করা তো দূরের কথা, তেমন কল্পনাও করতো না অনেকেই।
সেই গেইমগুলোই এখন শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়েসীরাই খেলছেন। শুধু খেলছেনই না, গেইম খেলে লাখ লাখ ডলার আয়ও করছেন অনেকেই। তবে অনলাইনে গেইম খেলতে গেলে গেইমারকে নানান ধরনর প্রতারণার শিকার হতে হয়। তেমনই পাঁচ ধরনের প্রতারণা ও তার সমাধানের উপায় জানানো হচ্ছে প্রতিবেদনে।
ফিশিং : ফিশিং সবচেয়ে বেশি ঘটায় স্প্যামার বা স্ক্যামাররা। তারা গেইমারদের ক্রেডিট কার্ড নম্বর, ব্যাংক পাসওয়ার্ড এবং অন্যান্য অ্যাকাউন্ট লগইন ও তার পাসওয়ার্ড চুরি করে নেয়।
এমন ক্ষেত্রে স্ক্যামাররা কিছু জনপ্রিয় গেইমিং সাইটের আদলে সাইট তৈরি করে গেইমারদের আকর্ষণ করে। সেখানে যখন তারা লগইন করে তাদের ব্যাংক ডিটেইলস নিয়ে নেয়। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সেই ব্যাংক ডিটেইলস দিয়ে বড় ধরনের ক্ষতি করে ফেলে গেইমারের। বিশেষ করে তথ্যগুলো ব্ল্যাক মার্কেটে বিক্রি করে দিয়ে।
সমাধান : ফিশিং থেকে রক্ষা পেতে কখনোই কোনো অপরিচিত বা সন্দেহজনক মেইলে ক্লিক করবেন না। কিংবা কোনো টেক্সট ম্যাসেজেও না। এমন হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্রাউজার ওপেন করে গেইমের আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করে দেখুন এবং নিশ্চিত হোন কেউ কোনো কিছু ঘটিয়েছে কিনা।
ট্রল ও বুলিং : অনলাইনে গেইম খেলেছেন আর বিভিন্ন ধরনের ট্রল বা বুলিংয়ের শিকার হনিনি এমন গেইমরা খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে। কারণ এখন ভার্চুয়াল গেইমে কথা বলা এবং লেখার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তবে গেইমররা অনেকেই এই সীমা অতিক্রম করে ফেলে। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে বিপক্ষকে ধৈর্য্যহীন করে তুলে নিজের কাজ উদ্ধার করতে পটু তারা।
সমাধান : কোনো গেইমার এমন আচরণ করলে তাদের বিরুদ্ধ রিপোর্ট করুন। এছাড়াও তাদের সঙ্গে খেলা বাদ দিতে পারেন। এমনকি আপনি কখনোই তাদের কাছে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করবেন না। এতে বড় ধরনের ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।
প্রতারণা ও জালিয়াতি : গেইমের ধরণ ও খেলার নিয়মের উপর ভিত্তি করে বেশ কিছু প্রতারণা হয়। এর অনেক কিছু আবার বৈধ, আবার কিছু একেবারেই অবৈধ।
অনেক সময় আপনি যার সঙ্গে গেইম খেলছেন সে কোনো ব্যক্তি নয়, দেখা যায় কোনো এআই বট অপরপ্রান্তে খেলছে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রতারণা করা হয় গেইম চলার মাঝ পথে সেটি বন্ধ করে দিয়ে। ভার্চুয়াল জালিয়াতি করার জন্য অনেক দল থাকে, যারা নানা ধরনের অর্থনৈতিক অফার দেয়, মিথ্যা সনদ দিয়েও জালিয়াতি করে।
সমাধান : অপরিচিত ও সন্দেহভাজন কারো কোনো অফার গ্রাহণ করবেন না। কোনো অফার আসলে অবশ্যই তা যাচাই করে নেওয়া দরকার। এমন কী কোনো গেইমে যদি দেখেন কেউ অস্বাভাবিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাহলে রিপোর্ট করুন কর্তৃপক্ষের কাছে।
গেইমের ক্যারেক্টার ও তালিকা চুরি : অপরাধীরা সবসময় গেইমের ক্যারেক্টার, গেইমের ইন ডেফথ রিপোর্ট এমন কি পেইড গেইমের অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড ডিটেইলস হাতিয়ে নেবার জন্য উদগ্রীব থাকে। এটা একাধিক উপায়ে করতে পারে। যেমন ফিশিং, অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড হাতাতে ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে দেওয়ার মতো। সাধারণত জনপ্রিয় গেইমগুলোতে এটি বেশি দেখা যায়।
সমাধান : আপনি কোনো গেইমে ভালো অবস্থানে চলে গেলে অ্যাকাউন্টটির সুরক্ষায় কঠোর হোন। নজর দিন সেদিকে। অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তায় টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন, জটিল এবং ইউনিক পাসওয়ার্ড, প্রাথমিক ইমেইল সবকিছু দিয়ে রাখুন।
কম্পিউটার ও স্মার্টফোন কম্প্রোমাইজ : হ্যাকররা অনেক ধূর্ত হয়। তারা সবসময় আপনার চোখে ধুলা দিয়ে নিজের কার্যসিদ্ধি করতে ওস্তাদ। তাই আপনাকে নানা প্রলোভনে কোনো সাইটে যেতে বাধ্য করতে পারে। আর তার মাধ্যমে পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিতে পারে। একই সঙ্গে ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে দিয়ে হাতিয়ে নিতে পারে পাসওয়ার্ড। এছাড়াও তারা কোনো আপডেট দেবার কথা বলেও আপনার ডিভাইসটি কম্প্রোমাইজ করে নিতে পারে। আর সেখান থেকে আপনার সব তথ্যই তখন চলে যাবে হ্যাকারের হাতে।
সমাধান : এর সামধানে আপনাকে ডিবাইসের নিরাপত্তায় নজর রাখতে হবে। সবধরনের প্রোটেকশন রাখতে হবে। প্রয়োজনে কোনো অ্যািন্টবাইরাস ব্যবহার করে ডিবাইসকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
এই কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখলে একজন গেইমার অনলাইনে নিরাপদে গেইম খেলতে পরবেন।
সূত্র : ইন্টারনেট, ইএইচ/মার্চ২৭/২০২০/১৬১৬