![]() |
আল-আমীন দেওয়ান, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : মাত্র এক মাসের ব্যবধানে নিজেদের ৬ লাখ ৯ হাজার সক্রিয় গ্রাহক সংযোগ হারিয়েছে গ্রামীণফোন।
চলতি বছরের জানুয়ারি হতে ফেব্রুয়ারি মাসে অপারেটরটির সংযোগের হিসেবে এমন ব্যবধান দেখা গেছে।
অথচ একই সময়ে রবির সংক্রিয় গ্রাহক সংযোগ বেড়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার, বাংলালিংকের বেড়েছে ৮ লাখ ২২ হাজার এবং টেলিটকের ৪ হাজার।
গ্রামীণফোনের ইতিহাসে শুধু এককভাবে একই সময়ে এমন সংক্রিয় গ্রাহক সংযোগ হারানো এই প্রথম।
২০১৬ সালের আগস্টে দেশের সব অপারেটরেরই বড় সংখ্যায় সংযোগ কমে গিয়েছিল। তবে সেটির প্রেক্ষাপট ছিল বিশেষ। ওই সময়ে সিম বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কারণে প্রায় ১ কোটির মতো সিম বন্ধ হয়েছিল।
গ্রামীণফোন অবশ্য বলছে, এই সংযোগ হারানো কারণ সিমের স্বল্পতা।
গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন মুহাম্মদ হাসান টেকশহরডটকমকে বলেন, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের দিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন না পাওয়ায় বাজারে গ্রামীণফোনের প্রিপেইড সিমের স্বল্পতা ছিল।
অপারেটরটির উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলছেন, ব্যবহার (সচল না থাকা) না হওয়ার জন্য প্রতি মাসেই বেশ কিছু সংযোগ সক্রিয় থাকে না। কিন্তু প্রতি মাসে বেশ সংখ্যক নতুন সংযোগ যোগ হওয়ায় নিস্ক্রিয় হওয়া ওই সংযোগ সেভাবে উল্লেখযোগ্য হয় না। এবার নতুন সিম বিক্রি কম হওয়ায় হিসাবটা এমন হয়েছে।
একটানা ৯০ দিন কোনো সিম কোনোভাবে ব্যবহার না হলে সেটি সক্রিয় সংযোগের তালিকা হতে বাদ পড়ে যায়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতে সিম ফুরিয়ে যাবার কথা জানিয়েছিল গ্রামীণফোন।তখন নতুন করে বরাদ্দ না পেলে কয়েকদিনের মধ্যে অপারেটরটি আর সিম দিতে পারবে না এবং বাজারে গ্রামীণফোনের সিম নিয়ে পেঁয়াজের মতো সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশংকা করছিলেন অপারেটরটির সিইও ইয়াসির আজমান।
এরপর ১২ র্মাচ অপারেটরটিকে রিসাইকেল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরায় বিক্রিযোগ্য নাম্বার অনুমোদন দেয়া হয়।
বিটিআরসির সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে গ্রামীণফোনের সক্রিয় সংযোগ হয় ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার যা জানুয়ারিতে ছিল ৭ কোটি ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার।
দেখা যাক গত এক বছরে (২০১৮ সালে) কীভাবে গ্রাহক সংযোগ বেড়েছে জিপির। বছরটির ডিসেম্বর ছিল ৭ কোটি ৬৪ লাখ ৬২ হাজার, নভেম্বরে ৭ কোটি ৬১ লাখ ১৫ হাজার, অক্টোবরে ৭ কোটি ৬০ লাখ ৬৭ হাজার, সেপ্টেম্বরে ৭ কোটি ৫৭ লাখ ১৭ হাজার, আগস্টে ৭ কোটি ৫৬ লাখ ১৯ হাজার, জুলাইয়ে ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩৩ হাজার, জুনে ৭ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার, মে’তে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৮১ হাজার, এপ্রিলে ৭ কোটি ৪৪ লাখ ৭৩ হাজার, মার্চে ৭ কোটি ৪০ লাখ ৫৩ হাজার, ফেব্রুয়ারি ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার এবং জানুয়ারিরে ৭ কোটি ৩০ লাখ ৬৮ হাজার।
গ্রাহক সংখ্যায় দ্বিতীয় বড় অপারেটর রবির সংযোগের অবস্থা কেমন ছিল দেখা যাক। চলতি বছরের ফেব্রয়ারিতে অপারেটরটির সংযোগ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার। জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৯৩ লাখ ২১ হাজার।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৪ কোটি ৯০ লাখ ৪ হাজার, নভেম্বরে ৪ কোটি ৮৭ লাখ ৪২ হাজার এবং অক্টোবরে ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৪৯ হাজার।
বাংলালিংকের চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সংযোগ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজার। এটি আগের মাস জানুয়ারিতে ছিল ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৪৮ হাজার।
একইভাবে ফেব্রুয়ারিতে টেলিটকের সংযোগ ছিল ৪৮ লাখ ৭৭ হাজার যা জানুয়ারিতে ৪৮ লাখ ৭৩ হাজার ছিল।
গ্রামীণফোনের সিম সংকটের বিষয়ে দেখা যায়, অপারেটরটি ০১৭ নম্বর সিরিজের পর ২০১৮ সালের নভেম্বরে ০১৩ সিরিজের দুটি সিরিয়ালে ২ কোটি নতুন নম্বর পায়। ০১৩০ এবং ০১৩১ নম্বর সিরিয়ালের প্রতিটিতে এক কোটি করে এই দুই কোটি সিম মিলেছিল বরাদ্দে।
২০২০ সালের শুরুতে এসে প্রায় ফুরিয়ে যায় এই বরাদ্দ। অডিট আপত্তির পাওনা দাবি নিয়ে বিরোধে এনওসি বন্ধ থাকার কারণে তখন পুরোনো বা রিসাইক্লিলিং সিমও বিক্রি করতে পারছিল না অপারেটরটি।
টানা ১৫ মাস অব্যবহৃত থাকা সিম রিসাইক্লিলিং সিম হিসেবে বিটিআরসির অনুমোদন সাপেক্ষে পুনরায় বিক্রি করতে পারে অপারেটরগুলো। সেখানে জিপির রয়েছে ৩০ লাখ সিম। যা এখন বিক্রির অনুমোদন পেয়েছে তারা।
এডি/২০২০/এপ্রিল২১/০৪২৬
আরও পড়ুন –
গ্রামীণফোন পেলো প্রথম দেশি সিইও
ডেটা ব্যবহারে জিপিকে আরও পেছনে ফেলেছে রবি
‘আর কোথায় যাবে জিপি, টাকা দিতে হবে এবার’
সিম নিয়ে পেঁয়াজের মতো অবস্থার আশংকা জিপির