![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : সারাবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও ফাইভজি চালুর প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জয় বলেন, বাংলাদেশ ফাইভজি প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকবে না, সারাবিশ্বের সঙ্গেই এটি দেশে চালু হবে। আওয়ামী লীগের চলতি মেয়াদেই এটি চালু করা হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব নূর-উর-রহমান এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস বাংলাদেশের সিইও ঝাংজেংজুন।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, দেশে এখন তথ্যপ্রযুক্তি রপ্তানি অফিসিয়ালি হিসেবে এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি রপ্তানির অনেক কাজ ইন্টারনেট বেইজ, এটা ট্র্যাক করা এখনও ওভাবে সম্ভব হয়নি। সে হিসেবে এটি আনঅফিসিয়ালি আরও এক-দুই বিলিয়ন ডলার হবে।
‘শুধু এগুলো নয় দেশে এখন মোবাইল ফোন, টেলিভিশন,স্মার্ট ডিভাইস মানে হার্ডওয়্যারের রপ্তানি দ্রুত বাড়ছে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশে পোশাক খাতের রপ্তানিকেও ছাড়িয়ে যাবো খুব তাড়াতাড়ি। আর এ সব কিছুর সুফল পাবে বাংলাদেশের জনগণ’ বলছিলেন তিনি।
জয় বলেন, আগে ৩০ মিলিয়ন মোবাইল আমদানি করতে হতো আর এখন দেশে ২০ মিলিয়ন মোবাইল ফোন তৈরি হয়। বাংলাদেশের ফোন রপ্তানি হচ্ছে, যা মানে দিকের বিশ্বমানের। ১০-১১ বছর আগে এসব কেউ ভাবতে পারতো না। অপারেটরগুলো থ্রিজি ফোরজি চালু করতে তেমন আগ্রহী ছিলো না। তারা ব্যাকবোনের কথা বলতো, ডেটা ইউজারের কথা বলতো। এসবে পরিবর্তন এনেছে বর্তমান সরকার। দেশে লো কস্টে মোবাইল ফোন তৈরির ব্যবস্থা করেছে। এখন সব কিছুই সম্ভব বাংলাদেশে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে টেলিটক প্রধানতম মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এখন বিএসসিসিএল, বিসিএসসিএল, বিটিসিএল, টেশিস নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়, এগুলো এখন সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।
এই মেলায় ফাইভজি প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে তা সরাসরি দেখা যাচ্ছে। ফাইভজির টাওয়ার, ডিভাইস নেটওয়ার্কিংসহ এই প্রযুক্তি বিস্তারিত তুলে ধরা হচ্ছে। ফাইভজি ছাড়াও মেলায় বিভিন্ন ভবিষ্যত প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ডিভাইস উপস্থাপন করা হয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এই মেলার আয়োজক ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। সহযোগিতায় রয়েছে বিটিআরসি, বিটিসিএল, টেলিটক, বিএসসিসিএল, বিসিএসসিএল, ডাক বিভাগ ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সংগঠন আইএসপিএবি।
মেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার প্রযুক্তির মহাসড়ক’।
মেলায় বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি ও আইএসপিসহ ৮২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। প্যারেন্টাল কন্ট্রোল, ট্রিপল প্লে (এক ক্যাবলে ল্যান্ডফোনের লাইন, ইন্টারনেট ও ডিশ সংযোগ), মোবাইল অ্যাপস, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ও প্রযুক্তি ইত্যাদি প্রদর্শন করা হচ্ছে। ওয়ালটন, স্যামসাং, সিম্ফনির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্য দেখাবে, দেশী সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো তাদের তৈরি সফটওয়্যার ও সেবা উপস্থাপন করছে।
এছাড়া মোবালই অপারেটরগুলো তাদের ভয়েস, ইন্টারনেট ও মূল্য সংযোজিত সেবা (ভ্যাস) দেখাতে এসেছে। জেডটিই, হুয়াওয়ে, নকিয়া, এরিকসন ফাইভজি ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে, তারা লাইভ অনুষ্ঠানসহ এর ব্যবহার উপযোগিতা তুলে ধরছে।
মেলায় শিশুদের প্রোগ্রামিং ও রোবটিক্স শিক্ষা অনুষ্ঠান রয়েছে, টেলিমেডিসিন ও টেলিকম বিভাগের প্রতিষ্ঠানসমূহের সেবা প্রদর্শিত হচ্ছে।
রয়েছে ডিজিটাল উদ্যোক্তা সম্মেলন, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা।
তিন দিনের মেলায় ১৩টি সেমিনারে সরকারের মন্ত্রী, দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ বক্তারা বর্তমানের প্রযুক্তি ও আগামী দিনে প্রযুক্তির গন্তব্য নিয়ে বলবেন। আলোচনা করবেন ট্যালেন্ট গ্যাপ, ডিজিটাল অর্থনীতি, ডিজিটাল গ্রোথ, স্মার্ট সিটি, এসডিজির অ্যাচিভমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে।
২৫টি স্টল, ২৯টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ২৮টি প্যাভিলিয়ন নিয়ে হচ্ছে এই মেলা। যেখানে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো তাদের ডিজিটাল অগ্রগতি তুলে ধরছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রয়েছে পৃথক কর্নার। সেই কর্নারে প্রযুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনী তুলে ধরা হয়েছে।
মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০ টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলা সকলের জন্য উম্মুক্ত।
মেলায় ঢুকতে www.digitalbangladeshmela.org.bd ঠিকানায় গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। মেলার ভেন্যুতেও তাৎক্ষণিক নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকবে।
এডি/২০২০/ডিসেম্বর১৬/১৩০০
আরও পড়ুন –
ফাইভজির দেখা মিলবে ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায়
ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের সম্মাননা পেলেন ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান