![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : দেশে মোবাইল টাওয়ার থেকে নির্গত রেডিয়েশনের মাত্রা ক্ষতিকর পর্যায়ে নেই বলে জানিয়েছেন অ্যামটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এসএম ফরহাদ হোসেন।
দেশে মোবাইল টাওয়ার থেকে রেডিয়েশন নির্গত মাত্রার স্বাভাবিক মান বেঁধে দেওয়া হয়েছে ২.১০৬। এর নিচে থাকলে সেটা ক্ষতিকর নয়। গত কয়েক মাস দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) তাদের পরীক্ষা চালিয়ে যে মাত্রায় রেডিয়েশন পেয়েছে তা এক পয়েন্টেরও কম। যেটাকে ক্ষতিকর নয় বলে জানিয়েছেন ফরহাদ হোসেন।
সম্প্রতি টেকশহরডটকমের অতিথি হয়ে এসে টেলিকম খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন দেশের মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব ফরহাদ হোসেন।
দেশে টেলিকম খাতকে সেবা খাত হিসেবে উল্লেখ করে তিনি জানান, খাতটি সবসময় মানুষকে সেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছে। যাতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় প্রতিষ্ঠানগুলোর। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সঠিক বিষয়টি সামনে না আসায় জনগণ খাতটি সম্পর্কে ভুল ধারণা পান।
মোবাইল টাওয়ার থেকে রেডিয়েশন মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি ছোট্ট একটা উদাহরণ দিয়ে বলবো, আপনি যখন একটি বাতির আলো জ্বালাবেন তখন বাতির ঠিক নিচে অন্ধকার থাকে। রেডিয়েশনের বিষয়টিও অনেকটা তাই। যার বাসার উপর টাওয়ার থাকবে তিনি সবচেয়ে নিরাপদ। তাই বলে অন্যরা যে নিরাপদ নয় সেটা নয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে রেডিয়েশনের স্ট্যান্ডার্ড মাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে ২.১০৬। এর নিচে থাকলে সেটা ক্ষতিকর নয়।
ফরহাদ হোসেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) করা দুটি জরিপের রিপোর্ট তুলে ধরেন। বিটিআরসি খুলনা বিভাগে জুলাই-আগস্ট সময়কালে যে রেডিয়েশনের মাত্রার কারিগরি জরিপ চালিয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, সুন্দরবন এলাকায় রেডিয়েশনের মাত্রা ছিল ০.০০৩৮, খুলনা মেডিকেল কলেজে রেডিয়েশনের মাত্রা ছিল ০.০৪৪৬, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ০.০২৪২।
এছাড়াও গত অক্টোবরে চট্টগ্রাম বিভাগেও জরিপ চালিয়েছে বিটিআরসি। চট্টগ্রাম বিভাগে বিটিআরসির জরিপে রেডিয়েশনের মাত্রা পাওয়া গেছে ০.০০১৫, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রয়েছে ০.৫৬ মাত্রার রেডিয়েশন।
ফরহাদ হোসেন বলেন, এসব এলাকায় কোথাও কিন্তু রেডিয়েশনের মাত্রা এক-ও আসেনি। অথচ বিভিন্ন সংস্থা এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা রেডিয়েশনের মাত্রা বেঁধে দিয়েছে ২.১০৬।
তিনি বলেন, আমি এতোটুকু আশ্বস্ত করতে চাই, যারা রেডিয়েশনের বিষয় নিয়ে অনেক বেশি আতঙ্কিত, এমন আতঙ্কিত হওয়ার বা ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।
মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে যে পরিমাণ রেডিয়েশন নির্গত হয় তা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর নয় দাবি করে ফরহাদ হোসেন দুটি উদাহরণ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালে ভারতের আদালত একটি রায় দিয়েছে, রায়ে বলা হয়েছে টাওয়ার থেকে যে রেডিয়েশন হয় তাতে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর কোনো কিছু নেই।
অস্ট্রেলিয়াতে একটা জরিপ হয়েছে এবং সেখানে দীর্ঘ সময় নিয়ে সেটি করা হয়েছে। সেখানে বিষয় ছিল ক্যান্সার সংক্রান্ত। সেখানে বলা হয়েছে, যেহারে জনসংখ্যা বেড়েছে সেখানে টাওয়ার থাকা এবং না থাকার মধ্যে রেডিয়েশনের কোনো ইমপ্যাক্ট নেই।
তাহলে অ্যামটব বা মোবাইল অপারেটররা বিষয়টি নিয়ে মানুষকে সচেতন করছে না কেনো বা সচেতন করতে আদৌ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হয় সংগঠনটির মহাসচিবের কাছে।
তিনি জানান, রেডিয়েশন নিয়ে আমরা বিভিন্ন ভাবে নানা সময়ে মানুষকে সচেতন করেছি, করছিও। আপনাদের মাধ্যমেও আমরা জানাতে চাই যে, রেডিয়েশন নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। কারণ এটা নন আয়োনাইজড হওয়ায় এটি মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর নয়।
রেডিয়েশন ছাড়াও ফরহাদ হোসেন কথা বলেন দেশে থ্রিজি, ফোরজি নেটওয়ার্কের সর্বশেষ অবস্থা, মোবাইল অপারেটরদের উপর সরকারের আরোপিত ভ্যাট-ট্যাক্স, গ্রাহকদের ভোগান্তি ও ব্যয় বৃদ্ধি, অপারেটরদের কাছ থেকে বিটিআরসির দাবি করা পাওনাসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে।
বিস্তারিত শুনতে পারবেন টেকশহরের ইউটিউব চ্যানেল বা নিচের ভিডিওটিতে।
ইএইচ/ নভে ১৭/ ২০১৯/