![]() |
শাহরিয়ার হৃদয়, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : লুমিয়া সিরিজের বাইরে যে ফোনটি দিয়ে নকিয়া সাড়া ফেলেছে, সেটি হলো নকিয়া এক্স সিরিজ। অ্যান্ড্রয়েড ও উইন্ডোজ ফোনের সমন্বয়ে তৈরি সিরিজের ফোনগুলো উঠতি বাজারের প্রতি লক্ষ্য রেখে তৈরি, তাই দাম বেশ কম।
কম দামে যারা এ নতুন ইন্টারফেসের ফোন ব্যবহার করতে চান, তারা বেছে নিতে পারেন নকিয়া এক্স।
ডিজাইন
নকিয়া এক্সের ডিজাইনের মূল আকর্ষণ রঙ-বেরঙের খেলা। বিভিন্ন বয়সীদের রুচির সঙ্গে মিল রেখে ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন রঙ থেকে পছন্দের ফোনটি বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকছে। কিছুটা বেসিক কনফিগারেশনের ফোন হলেও এর বিল্ড কোয়ালিটি খুবই চমৎকার, নকিয়া লুমিয়া সিরিজের মতো।
অ্যান্ড্রয়েড বা উইন্ডোজ ফোনের তিনটি বাটনের বদলে ফোনের নিচে একটি মাত্র সফট বাটন রয়েছে। এর ওজন মাত্র ১২৮.৭ গ্রাম।
ডিসপ্লে
নকিয়ার অন্যান্য স্মার্টফোনের তুলনায় এর স্ক্রিন বেশ ছোটই বলতে হবে, মাত্র ৪ ইঞ্চি। এলসিডি স্ক্রিনের রেজুল্যুশন ৪৮০*৮০০ পিক্সেল, দুই আঙ্গুলের মাল্টিটাচ সাপোর্ট করে।
ক্যামেরা
এর প্রধান ক্যামেরা ৩.২ মেগাপিক্সেল। ৪৮০ পিক্সেলে ভিডিও রেকর্ড করা যাবে। ফ্রন্ট ক্যামেরা নেই। ক্যামেরার ফিচারের মধ্যে আছে প্যানারোমা ও ফেস ডিটেকশন।
কানেক্টিভিটি
ওয়াই-ফাই, ওয়াই-ফাই হটস্পট, ব্লুটুথ ৩.০ এর পাশাপাশি কানেক্টিভিটির মধ্যে রয়েছে স্টেরিও এফএম রেডিও, এ-জিপিএস। সেন্সরের মধ্যে আছে অ্যাক্সেলেরোমিটার ও প্রক্সিমিটি।
কনফিগারেশন
এর চিপসেট কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন এসফোর প্লে ও প্রসেসর ডুয়াল কোর ১ গিগাহার্জ। গ্রাফিক্স প্রসেসর অ্যাড্রেনো ২০৩, র্যাম ৫১২ মেগাবাইট ও ইন্টারনাল মেমরি ৪ জিবি, যা মেমরি কার্ড দিয়ে ৩২ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।
পারফরম্যান্স
এর ডিফল্ট অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ৪.১.২ জেলি বিন। দুঃখজনকভাবে, সেরা পারফরম্যান্সের জেলি বিন উপভোগ করার মতো কনফিগারেশন ফোনটিতে নেই।
যারা গতিশীল অ্যান্ড্রয়েড ফোন আগে ব্যবহার করেছেন, তারা শুরু থেকেই নকিয়া এক্সের ধীরগতি বুঝতে পারবেন। অনেক সময় হোমপেজে ফিরে যেতে বা সাধারণ অ্যাপ ওপেন করতেও বেশ সময় লাগবে। র্যাম কম হওয়ায় গেইম বা গ্রাফিক্যাল অ্যাপ চালাতেও সমস্যা হবে।
সফটওয়্যার
এ ফোনটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এর বিশেষ ডিজাইনের অ্যান্ড্রয়েড ইন্টারফেস। ‘উইন্ডোজ ফোন’ ডিজাইনের অ্যান্ড্রয়েড বললেও যা ভুল বলা হবে না। হোমপেজে উইন্ডোজের টাইলস স্টাইল ও অ্যান্ড্রয়েডের সমন্বয় দেখা যাবে।
নতুন ধরনের ইন্টারফেসে অভ্যস্ত হতে সময় লাগতে পারে, তবে একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করা যাবে। এর আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য, অ্যান্ড্রয়েড ফোন হলেও কোনো গুগল সার্ভিস এতে ব্যবহার করতে পারবেন না।
গুগল প্লে, জিমেইল, ম্যাপস তো নেই-ই, এমনকি গুগল কনট্যাক্টের সাথেও সিনক্রোনাইজ করা যাবে না। এর বদলে মাইক্রোসফট ও নোকিয়ার বিভিন্ন সেবা (ওয়ানড্রাইভ, নোকিয়া স্টোর) ব্যবহার করতে হবে।
স্বাভাবিকভাবেই নোকিয়ার অ্যাপ স্টোর গুগল প্লে স্টোরের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। তাই যারা অ্যান্ড্রয়েড এক্সপেরিয়েন্সের জন্য ফোন কিনবেন, এটি তাদের জন্য নয়।
ব্যাটারি
ফোনটিতে ১৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। এটি টানা ২৬ ঘণ্টা মিউজিক প্লে করতে পারবে, স্ট্যান্ডবাই থাকবে ৪০৮ ঘণ্টা।
দেশের বাজারে নোকিয়া এক্স পাওয়া যাচ্ছে ৯ হাজার ৮০০ টাকায়।
এক নজরে ভালো
– নতুন ইন্টারফেস
– আকর্ষণীয় ডিজাইন ও মজবুত গড়ন
এক নজরে খারাপ
– পারফরম্যান্স তেমন ভালো নয়
– ফ্রন্ট ক্যামেরা নেই
– গুগলের কোনো সার্ভিস নেই