রকেট তৈরি করলো ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : আহনাফ কাওসার। তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী। কী করছো? জানতে চাইলে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে, রকেট তৈরি করছি।

ঠিক সেই সময়টাতে আহনাফ রকেট তৈরির জন্য ককশিট কাটছিলো। তার পাশেই বসে তার দলের আরেক সদস্য নুমায়া আইমানা আরিফ রকেটের কাঠামো তৈরির জন্য কাগজ কেটে গোল করে সেটাতে আঠা লাগাচ্ছিল। একইভাবে দলের অন্যরাও কোন না কোন কাজ করছিল রকেট তৈরির জন্য।

এভাবেই চারটি দলে ভাগ হয়ে ৩০ ক্ষুদে বিজ্ঞানী পাঠ নিচ্ছিল রকেট তৈরির। সবাই খুব উচ্ছ্বসিত হয়েই কাজ করছিল। একে অপরকে সহযোগিতায় তাদের কোন কমতি ছিল না।

Techshohor Youtube

সেই কর্মশালাতেই কথা হচ্ছিল আরেক শিশু শাহাজোর বিন চিশতির সঙ্গে। বাসায় বিজ্ঞান বাক্স নিয়ে সে খেলা ধুলা করে। সেখান থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ। তাই সে এসেছে।

শাহাজোর বলছিল, আমার এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। সবাই মিলে রকেট তৈরি করছি। পরে এটা ওড়াবো।

কেন তার সন্তানকে রকেট তৈরির মতো বিষয়ে কর্মশালায় নিয়ে এসেছেন, জানতে চাইলে শাহাজোরের মা রুমা ইসলাম টেকশহরডটকমকে বলেন, সে খুব ভালো ফুটবল খেলে। পাশাপাশি সে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করার কথা বলে। বাসায় বিজ্ঞান বাক্স নিয়ে খেলা করে। যখন জানতে পারলাম এমন একটি কর্মশালা করা হবে তখই তাকে আনার চিন্তা করি।

তিনি বলেন, আমি চাই সে তার ইচ্ছে মতো কাজ করুর। সে আগ্রহী বলেই তাকে নিয়ে আসা।

আরেক অভিভাবক রেজওয়ানা খান বলেন, এখন তো সময় এসেছে ক্লাস ওয়ান, টু থেকেই বাচ্চাকে কোডিং এবং বিজ্ঞানের বিষয়গুলো শেখানো দরকার। সেটা স্কুলেই ব্যবস্থা রাখা উচিত।

তিনি বলেন, আমরা যদি বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করি তবে দেখবো আমাদের বাচ্চারা অনেক পিছিয়ে তাদের চেয়ে। দেশে এমন আয়োজন হওয়া দরকার। তাহলে কিছুটা হলেও আমরা দেখতে পারবো বাচ্চারা বিষয়টি জানে।

শনিবার বাচ্চাদের রকেট তৈরির কর্মশালাটি যৌথভাবে করেছে নাসা সায়েন্টিফিক প্রব্লেম সলভার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরাম ও ইন্টারনেট সোসাইটি বাংলাদেশ।

রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে সকালে কর্মশালাটি শুরু হয়। চলে দুপুর দুইটা পর্যন্ত।

আয়োজনে মেন্টরদের প্রধান অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রবি শঙ্কর শীল বলেন, বাচ্চারা কতটা আগ্রহী এদের না দেখলে বোঝা যাবে না। এরা খুব ভালো করেই রপ্ত করছে। প্রত্যাশা থাকবে এদের মধ্যেই একদিন কেউ নাসা জয় করবে।

বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আরিফুল হাসান অপু টেকশহরডটকমকে বলেন, তারা এমন কাগজের রকেট তৈরি করা থেকেই আগ্রহী হবে। এখানে যারা এসেছে সবাই কিন্তু খুবই আগ্রহী। আমরা চাই বাচ্চা থেকেই এমন আগ্রহ জন্মাক তাদের মধ্যে।

তিনি বলেন, আমরা অদূর ভবিষ্যতে নাসায় দেশের অংশগ্রহণ দেখতে চাই। এটাকে লক্ষ্য করেই বিভিন্ন ধরনের কর্মশালা ও আয়োজন করছি আমরা।

দিনব্যাপী আরও সেমিনার হবার কথা থাকলেও এগুলোর পরিচালক এমআইটি জিরো রোবটিক্স ল্যাবের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশী মিজানুল চৌধুরী অসুস্থ থাকায় তা আগামী ১২ মার্চ অুনষ্ঠিত হবে। মিজানুল চৌধুরী কাজ করছেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের নভোচারীদের সঙ্গে।

আয়োজনটির মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে টেকশহরডটকম।

টাইটেল স্পন্সর ইনোভেডিয়াস প্রাইভেট, গোল্ড স্পন্সর স্টার কম্পিউটার সিস্টেম ও বাংলাদেশ কপিরাইট অ্যান্ড আইপি ফোরাম।

ইএইচ/মার্চ০৯/২০১৯/১৬৩০

*

*

আরও পড়ুন