![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : অ্যালিসা ম্যারির ইউটিউব চ্যানেলটি বেশ জনপ্রিয়।
কয়েক বছর ধরে ইউটিউব চ্যানেলটিতে ভিডিও আপলোড করার পর তার মনে হতে লাগলো তার কাজের চাপ অতিরিক্ত বেড়ে গেছে।
যে মানের ভিডিও তিনি বানাতে চান তা বানানো তার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত ভালো কনটেন্ট দেওয়ার চাপে পরে একদিন কান্নায় ভেঙে পরলেন। এরপরই সিদ্ধান্ত নিলেন আর নয়। এখন একটু বিরতি চাই। বিরতি শেষে তিনি ইউটিউবে আবার ফিরেও আসলেন। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে ইউটিউবারদের জীবনের কিছু কঠিন বাস্তবতার সঙ্গে তার পরিচয় ঘটলো।
কাজের চাপে মানসিকভাবে ভেঙে পরাকে বলা হয় বার্নআউট। এই বার্নআউটের শিকার হয়ে গত বছরের মে মাসে তিনি একটি ভিডিও আপলোড করেন। ভিডিওটির নাম ছিলো ‘দিস ইজ নট গুড বাই’। সেখানে তিনি তার ভক্তদের কাছে ব্যাখ্যা করেন কেনো তিনি ইউটিউব থেকে বিরতি নিচ্ছেন। তিনি বলেন, যে কনটেন্টগুলো তৈরি করছি তা তাতে আমি গর্বিত হতে পারছিনা। আমি খুব সৃষ্টিশীল মানুষ কিন্তু এখন আমি এতো ক্লান্ত যে কিছু উপভোগ করার মতো অবস্থা নেই।
ক্যাটি মর্টোন নামের এক ইউটিউবার বলেছেন, ইন্টারনেট কখনো ঘুমায় না। ইউটিউবাররাও তাই ঘুমাতে পারেন না। দিন রাত এক করে কাজ করার পর নিজের জন্য সময় বের করার সুযোগ অনেকেই পান না। বিরতি না নেওয়ায় ক্লান্তি আর হতাশা এমনভাবে তাদের গ্রাস করে যে ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দেয়।
পেশাগতভাবে একজন ইউটিউবার হলে সব সময় প্রাপ্তির উপরে থাকতে হয়। যেমন লাইক, কমেন্ট বা আলোচনা। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী লাইক, কমেন্ট না পেলে বা নেতিবাচক মন্তব্য বেশি এলে তাৎক্ষণিকভাবেই নিজের ব্যর্থতা বোঝা যায়।
যারা আইডিয়া বের করে ভিডিও বানান এবং তা এডিট করে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ছাড়েন তারাই ইউটিউবার হিসেবে পরিচিত। বিগত বছরগুলোতে মোট ১০ জন স্বনামধন্য ইউটিউবার নিজেদের চ্যানেল থেকে বিরতি নিয়েছেন।
২০১৭ সালের আগস্টে লাইনা মরিস নামের এক ইউটিউবার বিরতি নিয়ে এক বছরেও ফিরে আসতে পারেননি।
গত নভেম্বরে ইউটিউবার লাইলি সিং ‘আই উইল সি ইউ সুন’ নামের একটি ভিডিও আপলোড করেন। সেখানে তিনি আরও হাসি খুশি ও সুস্বাস্থ্য নিয়ে ফিরে আসার প্রতিজ্ঞা করেন।
গত বছরের মে মাসে এলি মাইলস ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেন, ‘বার্নট আউট এট ১৯’ নামের একটি ভিডিও। তিনি জানান, হতাশায় ভুগে অবস্থা এমন হয়েছিলো যে নিজের শেষ দেখার অপেক্ষায় ছিলাম।
ইউটিউবারদের মধ্যে সবচেয়ে বড় তারকা ফেলিক্স শেলবার্গও (পিউডিপাই) এই চাপের ঊর্ধ্বে নন। ২০১৬ সালে তিনিও বিরতি নিয়েছিলেন। শেলবার্গ বলেন, অনলাইন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে সব সময়ই ইউটিউবারদেরকে নতুন কিছু আপলোড করতে হয়। এটা তাদের পেশা। তাই হুট করে আয়, খ্যাতি প্রশংসা সব কিছুকে না বলে দেওয়াও কঠিন।
তবে তিনি নিজের সীমাবদ্ধতা জানেন। কখন তাকে বিরতি নিতে হবে তাও ভালো মতোই বোঝেন। তাই হয়তো এখনো তিনি হারিয়ে যাননি।
বিজনেস ইনসাইডার অবলম্বনে এজেড/ জানু ২৫/২০১৯/০৯৫৫