![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র মিলিয়ে মোবাইল হ্যান্ডসেটেরও নিবন্ধন করতে হবে।
এ পদক্ষেপ কার্যকর হলে মোবাইল ফোন কেন্দ্রিক অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করছে সরকার। হ্যান্ডসেট চুরি, অবৈধ আমদানি ও নকল হ্যান্ডসেট বিক্রিও বন্ধ হবে।
হ্যান্ডসেট নিবন্ধনে গ্রাহকদের খুব বেশি কিছু করতে হবে না। পুরো প্র্রক্রিয়াটির কাজ করবে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি শিগগির এ বিষয়ে খসড়াও তৈরি করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোবাইল সিম নিবন্ধনে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করার সুফল মিলেছে। এতে এ সংক্রান্ত অপরাধ অনেকটা কমেছে। হ্যান্ডসেট নিবন্ধন করা এ ক্ষেত্রে আরও উন্নতি হবে।
আগে থেকেই সিমের সঙ্গে এনআইডি’র মিল করা আছে। এখন মোবাইল হ্যান্ডসেটের মধ্যে থাকা ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর মিলিয়ে নতুন আরেকটা ডেটাবেজ করবে মোবাইল ফোন অপারেটগুলো। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (ইআইআর) ডাটাবেজ।
এই ডেটাবেজের জন্য গ্রাহককে কিছুই করতে হবে না। সব তথ্য যেহেতু মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে আগে থেকেই আছে তারা এখন শুধু তিনটি বিষয়কে এক করে একটি ডেটাবেজ তৈরি করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) তা হস্তান্তর করবে।
বিটিআরসির নির্দেশনা জারির দুই মাসের মধ্যে ইআইআর সিস্টেম বাস্তবায়ন করতে হবে অপারেটরদের।
আইএমইআই নম্বর না থাকা হ্যান্ডসেট এ সময়েই বন্ধ হয়ে যাবে। এমন হ্যান্ডেসেটের সংখ্যা অবশ্য খুব বেশি নয়।
এ জন্য একটি নির্দেশনার খসড়া তৈরি করেছে বিটিআরসি। এ বিষয়ে সকলের মতামত চাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ইতিবাচক সাড়া মিললে খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার প্রক্রিয়া শেষে বাস্তবায়নে আরও দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
একবার ডেটাবেজ হয়ে গেলে বাজারে আসা নতুন হ্যান্ডসেট বৈধপথে আমদানি না হলে সেটি তখন এ তথ্যভান্ডারে ঢুকতে পারবে না। ফলে কোনো মোবাইল অপারেটরের সিমে সেটি কাজও করবে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাজারে থাকা বর্তমান মোবাইল ফোনের ৩০ শতাংশই বৈধ পথে আমাদানি হয় না। ফলে সরকার প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারায়। এ পদ্ধতি কার্যকর হলে তখন অবৈধপথে কোনো হ্যান্ডসেট আমদানি হবে না। ফলে রাজস্ব বাড়বে।
আবার গ্রাহক পর্যায়ে হ্যান্ডসেট চুরি বা হারিয়ে গেলে সেটি আর অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। এ জন্য অবশ্য হ্যান্ডসেটের মূল মালিককে বৈধ কাগজপত্রসহ অভিযোগ দাখিল করতে হবে।
এ বিষয়ে বিটিআরসির স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ সাংবাদিকদের জানান, অবৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ইআইআর ডাটাবেজ তৈরি করবে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। পরে এটি জাতীয়ভাবে ইআইআরের সঙ্গে যুক্ত হবে। গ্রাহক, ব্যবসায়ী ও সরকার—সবার জন্যই সহায়ক হবে এ ব্যবস্থা।
খসড়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইআইআর ডাটাবেজে হ্যান্ডসেটগুলো থাকবে তিনটি শ্রেণিতে—ব্ল্যাক, হোয়াইট ও গ্রে।
হোয়াইট বলতে বোঝানো হয়েছে সব বৈধভাবে আমদানি করা, বৈধভাবে দেশে তৈরি ও বিটিআরসিতে নিবন্ধিত হ্যান্ডসেট।
সর্তকতার তালিকায় থাকা হ্যান্ডসেট রাখা হবে গ্রে শ্রেণিতে। এ শ্রেণিভুক্ত হ্যান্ডসেট শুধু নির্দিষ্ট সিমে কাজ করবে। এসব হ্যান্ডসেট গ্রাহকদের নিবন্ধনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ সময় নির্ধারণ করে দেবে।
চুরি হওয়া, আইএমইআই মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল আইএমইআই ও কিস্তিতে কেনা হ্যান্ডসেটের মূল্য পরিশোধ করা হয়নি- এমন আইএমইআই নম্বর থাকবে ব্ল্যাক শ্রেণিতে। এর বাইরে কিছু নম্বর ভিআইপি তালিকায় থাকবে।
বিদেশ থেকে উপহার হিসেবে নিয়ে আসা হ্যান্ডসেট অপারেটরদের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে গিয়ে ক্রয় রসিদ বা অন্যান্য মূল দলিল দেখিয়ে নিবন্ধন করা যাবে।
হ্যান্ডসেট বিক্রি করতে চাইলে অপারেটরদের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে গিয়ে এনআইডি থেকে আইএমইআই অনিবন্ধন করা যাবে। যিনি ওই হ্যান্ডসেট কিনবেন, তিনি তার নামে সেটি নিবন্ধন করে নিতে পারবেন।
এসজেড/আরআর/জানু ১৪/২০১৮/১১.২০
আরো পড়ুন ঃ-
মোবাইল আসল কিনা তা যাচাই ডিসেম্বর হতে
জিপি বাংলালিংকের ডিজিটাল সিম নিবন্ধন চালু
দেশে মোবাইল গ্রাহক ১৫ কোটি ৭০ লাখ
ইন্টারনেটের ভ্যাট কমাতে মোবাইল অপারেটরগুলোকে এনবিআরের নির্দেশনা