![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : অল্প দিনের মধ্যেই হয়তো ভারতের রাস্তাগুলোতে ইলেকট্রিক রিক্সা বা তিন চাকার গাড়িগুলোকে আদর্শ হিসেবে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যাবে।
দেশটির ১৩০ কোটি মানুষই আসলে কার্বন এনার্জির ওপর নির্ভরশীল। আর তাই দেশটির সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় ইলেকট্রিক গাড়িতেই ভবিষ্যৎ দেখছে।
গত সপ্তাহে ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লিতে শুরু হয়েছে ‘গ্লোবাল মবিলিটি সম্মেলন’। সম্মেলনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, দেশের গাড়ি শিল্প এবং এনার্জি খরচের পরিমাণে খুব দ্রুতই বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
তিনি এই পরিবর্তন আনার জন্য অবশ্য কাজও করেছেন। তাই কিছুটা হলেও জোর দিয়ে কথাটি বলতে পেরেছেন।
মোদি বলেছেন, খুব শিগগিরি দেশে ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে দেশব্যাপী একটি নীতিমালা তৈরি করছে সরকার। নীতিমালা চূড়ান্ত হলে দেশে আরও বেশি করে ইলেকট্রিক এবং তেলবিহীন গাড়ি নামানোর ইঙ্গিত দেন মোদি।
এমন নীতিমালার ফলে বিভিন্ন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতের বাজারে তাদের নতুন কর্মকাণ্ডের বিস্ফোরণ ঘটাতেও প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
এমন সুযোগ কাজে লাগাতে বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা ভারতে ইলেকট্রিক ও পরিবেশবান্ধব গাড়ি তৈরির জন্য কাজ শুরু করেছে। আগামী দু-এক বছরের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি ভারতে এমন গাড়ি নামাবে বলে আভাস দিয়েছে।
বসে নেই আরেক নির্মাতা সুজুকি। সম্প্রতি তারাও ঘোষণা দিয়েছে, তারাও এমন গাড়ি আনছে। ইতোমধ্যে ৫০টি ইলেকট্রিক গাড়ির প্রোটোটাইপ দেশটিতে পরীক্ষাও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
যদি ভারত ইলেকট্রিক পণ্যে ইনসেনটিভ দেয় এবং চালকদের বিশেষ ক্রেডিট সুবিধা দেবার ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে অল্প দিনের মধ্যে ইলেকট্রিক গাড়ির বাজার হবে চীনের বাজারের মতো।
ভারতের মাহেন্দ্রা সম্প্রতি স্বচালিত গাড়ির পরীক্ষা চালাচ্ছে এমন খবর দেখা গেছে। তবে এর বাইরেও প্রতিষ্ঠানটি সে দেশে ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির কাজ করেছ।
এমনকি মাহেন্দ্রা ওই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনে এমন গাড়ির উপস্থাপনাও তুলে ধরেন।
তিন চাকার গাড়ি হিসেবে খুব কম দামের মধ্যে, গ্রাম-গঞ্জসহ প্রত্যন্ত স্থানে চলতে সক্ষম এমন রিচার্জেবল গাড়ি তৈরির কথাও জানায়।
নিজেদের বাজার, তাই সেখানে শীর্ষে থাকা যায় কিনা এমন চেষ্টা করছে মাহেন্দ্রা। আর তাই কাজের গতিও তাদের জোরে বলে জানোচ্ছে ব্লুমবার্গ।
ব্লুমবার্গ ধারণা করছে, গত বছর ভারতে মাত্র দুই হাজার ইলেকট্রিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে সেই তুলনায় চীনে বিক্রি হয়েছে ৫ লাখ ৭৯ হাজার গাড়ি।
ভারত জ্বালানি হিসেবে তেলের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে চাইছে। তাই তাদের জাতীয় গ্রিডে ব্যাটারি বা বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি বাড়াতে জোর দিচ্ছে। তাতে করে পরিবেশবান্ধব করা যাবেও বলে মত তাদের।
তবে যে যাই বলুক না কেন, এই কাজটি করতে গেলে ভারতকে চীনের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে ব্যাটারির জন্য। কারণ, চীন এখনো ব্যাটারির বাজার ধরে রেখেছে। কিন্তু তার পরও ভারত চীনকেই আদর্শ মেনে ইলেকট্রিক গাড়িতেই ভবিষ্যৎ খুঁজছে।
সেই ভবিষ্যৎ খুঁজছে বলেই জোর গলায় ঘোষণা দিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে ইলেকট্রিক গাড়ি বিক্রির পরিমাণে যগান্তকারী পরিবর্তন আনবে।
ম্যাশেবল অবলম্বনে ইমরান হোসেন মিলন