![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ঘরের চেয়ে বাইরে যাদের বেশি থাকতে হয় তারা সবসময়ই চান শক্তিশালী ল্যাপটপ।
আর যাদের শহরের বাইরে মাঠে ঘাটে কাজ করতে হয় তারা চান শক্তপোক্ত ডিভাইস। যারা প্রচণ্ড দুরাবস্থা, যেমন কারখানা বা খনির মধ্যে কাজ করতে হয়, গবেষণার জন্য যেতে হয় ডোবা নালায় আর বিপদজনক সব জায়গায়, তাদের জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী আর অসম্ভব শক্তপোক্ত ল্যাপটপ।
এবারের রিভিউটি কিছুটা ব্যতিক্রম ডিভাইস নিয়ে। এক নজরে দেখে নেয়া যাক ডিভাইসটি সম্পর্কে।
একনজরে ডেল ল্যাটিচিউড এক্সট্রিম ১২:
ডিজাইন
প্রথমেই চোখে পড়বে ল্যাপটপটির বিশাল আকৃতি। অন্য সব ল্যাপটপের চেয়ে মোটা আর ভারী ডিভাইসটি বহন করাও একটি চ্যালেঞ্জ। অথচ এমনভাবে তৈরি করা না হলে সেটি ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন মেটাতে পারত না। অত্যন্ত শক্তিশালী ধাতব বডির প্রতিটি কোনায় দেয়া হয়েছে রাবারের বাম্পার। আর প্রতিটি পোর্টের ওপর দেয়া হয়েছে শক্ত রাবারের দরজা যাতে পানি বা ধুলা ঢুকতে না পারে।
পোর্টের অভাব নেই এ ল্যাপটপে। সকল প্রকার মনিটর পোর্ট, ইউএসবি, অডিও থেকে সিরিয়াল পোর্টও বাদ পড়েনি। সঙ্গে আছে নিরাপত্তার জন্য স্মার্টকার্ড রিডার। এসডি এবং মাইক্রো এসডি দুই প্রকার মেমরি কার্ড ব্যবহারের সুবিধা রাখা হয়েছে এতে।
ডিভাইসের আকৃতি বড় হলেও স্পিকার দেয়া হয়েছে একটি। সম্ভবত পানি নিরোধী করতে স্পিকার কম রাখা হয়েছে। কিবোর্ডে ব্যাকলাইট দেয়া হয়েছে, চিকলেট ঘরানার কিবোর্ডটি টাইপ করার জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর, কিন্তু রাগেড ল্যাপটপে এমনটাই স্বাভাবিক।
টাচস্ক্রিন ব্যবহারের জন্য ল্যাপটপে আছে স্টাইলাস। সেটি সরাসরি ল্যাপটপের বডিতেই ঢুকিয়ে রাখা যাবে।
সবশেষে ল্যাপটপের তলায় আছে ডক কানেক্টর। প্রয়োজনে ডকে রেখে বাড়ানো যাবে পোর্টের সংখ্যা, ব্যাটারির চার্জ এবং অন্যান্য সুবিধা।
ডিসপ্লে
বড়সড় বডির মধ্যে ১২ ইঞ্চি ডিসপ্লেটি দেখতে ছোট মনে হতে পারে। সেটির রেজুলেশন বা কনট্রাস্টও খুব আহামরি নয়। ব্রাইটনেস অবশ্য কাজ চালানোর মত। ডিসপ্লের টাচ প্রযুক্তি ক্যাপাসিটিভ নয়, রেজিস্টিভ। প্রয়োজনে ডিসপ্লে উল্টিয়ে ডিভাইসটি ট্যাবলেট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
প্রতিটি ফিচার ত্যাগের পেছনে রয়েছে ল্যাপটপটিকে আরও রাগেড করা। ডিসপ্লের ওপর দেয়া হয়েছে শক্ত পলিকার্বোনেট, যা হয়ত স্ক্র্যাচ পড়া থেকে রক্ষা করবে না, কিন্তু ঠিকই হাত থেকে পড়ে গেলে বা উচ্চ তাপে ডিসপ্লে ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে। রেজিস্টিভ টাচ এবং স্টাইলাস মোটা গ্লাভস পড়ে কাজ করার জন্য কার্যকর।
পারফরমেন্স
ইন্টেল কোর আই৭ প্রসেসরটি ল্যাপটপেই উচ্চ-মাঝারী শক্তির ডেস্কটপের সমান পারফরমেন্স দেখাবে। বিশেষ করে বড়সড় কুলিং সিস্টেম থাকায় টানা চাপে থাকলেও পারফরমেন্স সহজে পড়বে না।
র্যামের অভাব যাতে না হয় সে জন্য দেয়া হয়েছে ১৬ গিগাবাইট র্যাম, তবে ভারী কাজের জন্য সহজেই তা ৩২ গিগাবাইটে উন্নীত করা যাবে। র্যামের জন্য আছে দুটি স্লট, সরাসরি মাদারবোর্ডে সোল্ডার করা নয়।
আলাদা করে গ্রাফিক্স কার্ড বা জিপিউ এতে দেয়া হয়নি, ব্যবহার করা হয়েছে প্রসেসরের মধ্যে থাকা ইন্টেল জিপিউ। ফলে গেইমিং পারফরমেন্স হতাশাজনক, যদিও কোনওভাবেই এ ল্যাপটপটি গেইমিংয়ের জন্য তৈরি করা হয়নি।
দ্রুত কাজ করার জন্য দেয়া হয়েছে এম.২ এসএসডি। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে খুব সহজেই যাতে এসএসডি খুলে সঙ্গে নেয়া যায় তাই সেটি ল্যপটপে একটি স্লটে লাগানো হয়েছে।
সব মিলিয়ে, যেরকম কাজে ল্যাপটপটি ব্যবহার হতে পারে, তার জন্য ল্যাপটপটির পারফরমেন্স যথেষ্ট।
ব্যাটারি লাইফ
ব্যাটারি লাইফে খুব এগিয়ে নেই ল্যাপটপটি। টানা ব্যবহারে সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টা ব্যাকাপ পাওয়া যেতে পারে। তবে ব্যাটারি বদলযোগ্য, এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে একটি ফুরিয়ে গেলে আরেকটি তার বদলে যুক্ত করা যায়। তবে চার্জিং গতি যথেষ্ট দ্রুত।
থার্মাল ডিজাইন
ল্যাপটপের ফ্যান দেয়া হয়েছে এক পাশে, আর বাতাস টানার ভেন্ট আছে ল্যাপটপের নিচে। বড়সড় ডিজাইনের হলেও ল্যাপটপটির ফ্যান বেশ ছোট। তার পরও কুলিং নিয়ে সমস্যা নেই। বিশেষ করে কিবোর্ডের হ্যান্ডরেস্ট ব্যবহারে সমস্যা করবে না উৎপন্ন তাপ।
বিশেষত্ব
উচ্চ তাপের জায়গা, যেমন পাওয়ার স্টেশন বা খনি, অথবা প্রচুর আদ্রতা এবং পানির মধ্যে কাজের স্থান, যেমন জাহাজ, অথবা প্রচণ্ড ধুলার মধ্যে কাজ করতে হলে যেমন মরুভূমি, এমন ল্যাপটপ ছাড়া গতি নেই। বিশেষ করে তথ্যের নিরাপত্তার জন্য থাকা স্মার্টকার্ড রিডার, আরএফআইডি রিডার, খুবই কাজের।
এছাড়াও চাইলে সরাসরি এসএসডি খুলে ফেলার ফিচারটি তথ্যের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
এক নজরে ভাল
এক নজরে খারাপ
মূল্য
বাজারে ল্যাপটপটির দাম ৩ লাখ টাকার আশপাশে।
এস এম তাহমিদ