নারীর জন্য নারীর উদ্যোগ 'ঋতু'

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিশোরী ও নারীদের শরীরবৃত্তীয় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করার উদ্যোগ ‘ঋতু’।

ঋতু মূলত ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের বয়ঃসন্ধি ও মাসিক সম্পর্কে শিক্ষা দেবার একটা প্লাটফর্ম। কিশোরীদের বয়ঃসন্ধি ও মাসিক নিয়ে সচেতন করা এবং সে সম্পর্কে জ্ঞান দিতেই একটি উদ্যোগ নেন শারমিন কবীর। ২০১৬ সালে প্রযুক্তির মাধ্যমে এই শিক্ষা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠা করেন ঋতু।

শারমীন কবীর জানান, মাসিক নারীদের অত্যন্ত সাধারণ এবং শরীরবৃত্তীয় একটি ঘটনা। যেটাকে আমরা অতিরঞ্জিত করে একটা লজ্জা, ভয় আর কুসংস্কারে পরিণত করেছি। ফলস্বরূপ, যে সময়ে একটি মেয়ের নিজেকে নিয়ে প্রথম গর্ব করা উচিত, যা নিয়ে একটি মেয়ের আত্মবিশ্বাসী হওয়া উচিত তা গিয়ে ঠেকেছে ৪ থেকে ৫ দিন গোসল না করা, স্কুলে না গিয়ে ঘরের জানালা বন্ধ করে বসে থাকার মতো ঘটনায়।

Techshohor Youtube

Wreetu_Int-W-D-Techshohor

এই বন্ধ জানালা খুলে কিশোরী মেয়েদের মধ্যে আলো ছড়িয়ে দিতেই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছেন শারমিন কবীর।

বর্তমানে ‘ঋতু’ ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় মেয়েদেরকে বয়ঃসন্ধি ও মাসিক নিয়ে শিক্ষামূলক কাজ করে যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ঋতু রাজশাহী, যশোর, দিনাজপুর, খুলনা ও কিশোরগঞ্জে কাজ করছে। চলতি বছরে নতুন আরও ১৫ জেলায় কাজ শুরু করতে চায় ঋতু।

ঋতু কাজ করে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে। সেজন্য এর ওয়েবসাইটে গিয়ে বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। আর এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং সেবা।

এর বাইরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের পেইজ থেকে নানা ধরনের সচেতনতামূলক পোস্ট, ভিডিও তৈরি করে ছড়িয়ে দেয় ঋতু। যেখানে মেয়েদের বয়ঃসন্ধি নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন, সেগুলোর উত্তর দিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে ঋতুর প্লাটফর্মে থাকা অনবোর্ড স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেয়ার ব্যবস্থা করে থাকে।

এ ছাড়াও কর্মশালা থেকে শুরু করে ঋতু-সাথীদের প্রশিক্ষণের জন্য ঋতুর উদ্যোগে  রিসোর্স তৈরির কাজ করে।

 

ঋতুর প্রতিষ্ঠাতা শারমিন কবীর টেকশহর ডটকমকে বলেন, ডিজিটাল প্লাটফর্ম তৈরির মাধ্যমে এমন একটি প্রয়োজনীয় বিষয় সম্পর্কে সচেতন করতে এবং শিক্ষা দিতে আমরা মেয়েদের নিয়ে কর্মশালা করে থাকি।

অংশগ্রণকৃত প্রতিটি মেয়েকে এক সঙ্গে আরও সাহায্য দিয়ে যাবে এবং বইটি নিয়ে ছোট ছোট ভিডিও তৈরির মাধ্যমে বয়ঃসন্ধি ও মাসিক নিয়ে সবাইকে সচেতন করবে।

ঋতুর প্লাটফর্মের বর্তমানে কর্মরত প্রায় সবাই-ই নারী। তবে কাজটিকে এগিয়ে নিতে পুরুষের অংশগ্রহণ এবং অবদান রয়েছে বলে জানান শারমিন কবীর।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা করেছেন শারমিন কবীর। দীর্ঘদিন থেকেই কাজ করছেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কে (বিডিওএসএন) নারীদের প্রোগ্রামিং নিয়ে। এবার নারীদের নিয়ে নতুন একটি পৃথিবী গড়তে চান তিনি।

ঋতুর মাধ্যমেই দেশে নারীদের কর্মসংস্থানও তৈরি করা যাবে জানিয়ে শারমিন কবীর বলেন, এটা এখন পর্যন্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ। আমরা এই উদ্যোগকে দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই এবং প্রতিটি এলাকায় প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে নারী উদ্যোক্তা এবং নারীদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই।

ইমরান হোসেন মিলন

*

*

আরও পড়ুন