![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ল্যাপটপ ও ট্যাবের মাঝামাঝি ভাঁজ করার মতো ল্যাপটপ বাজারে এনে সাড়া ফেলে নির্মাতা লেনোভো। এবার তেমনই ডিভাইসে গেইমিং জিপিউ যুক্ত করে ‘গেইমিং হাইব্রিড’ তৈরি করেছে আরেক জনপ্রিয় নির্মাতা এসার।
দেখা যাক, তারা গেইমিং ল্যাপটপকে হালকা ট্যাবে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে কিনা।
এক নজরে এসার নাইট্রো ৫ স্পিন
ডিজাইন
সম্পূর্ণ অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি ল্যাপটপটি গেইমিং ল্যাপটপের তুলনায় খুবই পাতলা। কালো বডির মাঝে অল্প কিছু লাল অ্যাসেন্ট থাকায় ডিজাইনে কিছুটা গেইমিং ভাব বাদ পড়েনি। কিবোর্ডেও লাল ব্যাকলাইট ব্যবহার করা হয়েছে।
পুরোপুরি ভাঁজ করে ট্যাব হিসেবে ব্যবহারের সময় ল্যাপটপটি ধরতেও সমস্যা হবে না।
আরও পড়ুন ঃ জেডবুক এয়ার১৪ : ২০ হাজারের ল্যাপটপে পারফরমেন্সে কিন্তু থাকাই স্বাভাবিক
এটির ডান পাশে রয়েছে পাওয়ার বাটন, একটি ইউএসবি ২.০ পোর্ট, এসডি কার্ড রিডার, হেডফোন জ্যাক ও ভলিউম বাটন। বাম পাশে রয়েছে দুটি ইউএসবি ৩ পোর্ট, একটি ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট, এইচডিএমআই পোর্ট ও পাওয়ার জ্যাক।
কিবোর্ড টাইপ করার জন্য আরামদায়ক। তবে ব্যাকলাইট লাল হবার কারণে অন্ধকারে চোখে লাগতে পারে। এ ছাড়া ডিজাইনে আর তেমন কোনও সমস্যা নেই।
ডিসপ্লে
ফুল এইচডি রেজুলেশন ১৫ দশমিক ৬ ইঞ্চি ডিসপ্লের ল্যাপটপের জন্য যথেষ্ট। তবে ব্রাইটনেসে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। কালার ও কনট্রাস্ট চলনসই হলেও অসাধারণ নয়। সরাসরি দিনের আলোতে দেখতে কিছুটা কষ্ট হবে।
ডিসপ্লেটির মূল সমস্যা রঙের গ্যামুটের অভাব। শুধু এনটিএসসি পর্যায়ের রঙ দেখাতে সক্ষম এ ডিসপ্লেতে এসআরজিবি রঙের মাত্র ৪৮ শতাংশ দেখা যাবে। ফলে গেইম খেলার সময় সমস্যা না হলেও ফটো ও ভিডিও এডিটিংয়ে সমস্যা হবে।
গ্লসি ডিসপ্লেটিও সরাসরি আলোতে কাজ করার জন্য তেমন ভালো নয়।
পারফরমেন্স
ইন্টেল কোর আই৫ প্রসেসরগুলোতে ৮ম প্রজন্ম থেকে ইন্টেল চারটি করে কোর দেওয়া শুরু করেছে। ফলে লো-ভোল্টেজ সিরিজের হয়েও প্রসেসরগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী।
গিকবেঞ্চ অনুযায়ী, প্রসেসরটি ডেস্কটপ কোর আই৫-এর সমকক্ষ। ফলে সাধারণ সকল কাজ, মাঝারি গেইমিং ও সৌখিন ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য যথেষ্ট। ৮ গিগাবাইট র্যাম এখনও কাজের জন্য যথেষ্ট হলেও ভবিষ্যতে মাল্টিটাস্কিংয়ে ভোগাতে পারে।
ডিভাইসটির অন্যতম আকর্ষণ এনভিডিয়া জিটিএক্স ১০৫০ জিপিউ। এ ব্র্যান্ডের তৈরি সব জিপিউর মাঝে এটিই সবচাইতে কম শক্তিশালী গেইমিং পারফরমেন্সের জিপিউ। এতে করে সব গেইম চললেও হাই বা আল্ট্রা গ্রাফিক্সে ফুল এইচডি রেজুলেশনে খেলার আশা বাদ দিতে হবে।
ল্যাপটপটির মূল সমস্যা প্রসেসর বা গ্রাফিক্সে নয়, থার্মাল ডিজাইনে। দ্রুত গরম হয়ে যাওয়ার ফলে কিছুক্ষণ পরই প্রসেসর ও জিপিউ দুটোই ধীর হয়ে যেতে শুরু করে। ভালো কুলার ছাড়া টানা গেইম খেলা এক প্রকার অসম্ভব। তবে পাতলা ল্যাপটপে এ সমস্যা থাকবেই।
ব্যাটারি লাইফ
গেইমিং ল্যাপটপে ভালো ব্যাটারি লাইফ পাওয়া অসম্ভব। নাইট্রো ৫ স্পিন এর ব্যতিক্রম নয়। সাধারণ ব্যবহারে চার ঘন্টা এবং ব্যাটারি সেভিং মোডে সর্বোচ্চ পাঁচ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ পাওয়া যেতে পারে। গেইম খেলা বা ভারি কাজের সময় দুই ঘন্টায় সেটি নেমে যাওয়া আশ্চর্য নয়।
অতএব ল্যাপটপটি ব্যবহারের সময় হাতের কাছে চার্জার রাখা জরুরি।
পরিশেষ
গেইমিং ল্যাপটপ ভারি হওয়াটাই স্বাভাবিক। এসার যথেষ্ট চেষ্টা করেছে তা কমানোর। তারপরও এটি ট্যাব হিসেবে ব্যবহারের খুব বেশি উপযোগী নয়। এক হাতে রেখে ব্যবহার করা অস্বস্তিকর। তবে টেন্ট মোডে মুভি দেখার মজা নষ্ট হয়নি।
গেইমিং পারফরমেন্স ও থার্মাল ডিজাইনে সমস্যার কারণে যারা ভারি কাজের জন্য ল্যাপটপটি কিনতে চাচ্ছেন, তাদের অন্য মডেল বেছে নেওয়াই ভালো হবে।
মূল্য : দেশের বাজারে ল্যাপটপটি ৮৬ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
এক নজরে ভালো
এক নজরে খারাপ
আরও পড়ুন ঃ
সারফেস বুক২ : অনেক উচ্চাশার পরও নতুন প্রজন্মের অনন্য ল্যাপটপ