![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ছবি ও ভিডিও করতে হাল আমলে সবার প্রথম পছন্দ স্মার্টফোন। তবে অনেক স্থানে ফোন ব্যবহারের চাইতে ক্যামেরাই ভালো। এমন ক্ষেত্রে ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে অনেকেই এখন বেছে নিচ্ছেন অ্যাকশন ক্যামেরা।
স্বল্পমূল্যের এসব ক্যামেরার মধ্যে শাওমির ই সিরিজটি বেশ জনপ্রিয়। চীনা ব্র্যান্ডটি শুধু স্মার্টফোনে নয়, ক্যামেরাতেও বাজারে সাড়া পেয়েছে। এ ব্র্যান্ডের সর্বশেষ মডেলের ই-লাইট ক্যামেরাটি কেমন তা বিস্তারিত দেখা যাক এ রিভিউতে।
এক নজরে ই-লাইট অ্যাকশন ক্যামেরা
ডিজাইন
নির্মাতা ই-টেকনোলজিস সরাসরি গোপ্রো-কে নকল না করে ই-ক্যামেরাগুলোর ডিজাইনে নিজস্বতা ধরে রেখেছে। অনেকটাই ই-ফোরকে ক্যামেরার মতো ডিজাইনের ই-লাইট ক্যামেরাটির ওপরে রয়েছে শাটার বাটন, মাইক্রোফোন ও স্পিকার।
শাটার বাটনে একটি ইনডিকেটর এলইডি দেয়া হয়েছে। সামনের ডান পাশে রয়েছে লেন্স ও বাম পাশে ই লোগোর পাশে চার্জিং ও স্ট্যান্ডবাই এলইডি।
ক্যামেরার ডান পাশে রয়েছে চার্জার পোর্ট ও নিচে রয়েছে ক্যামেরা মাউন্ট, ব্যাটারি ও মেমরি কার্ড লাগানোর স্লট। পেছনের পুরোটা জুড়ে রয়েছে টাচস্ক্রিন ও বাম পাশটা খালি রাখা হয়েছে।
সম্পূর্ণ প্লাস্টিকে তৈরি হলেও ক্যামেরাটি খুব শক্তপোক্ত। পানি ও অতিরিক্ত ধুলার মধ্যে ব্যবহার ছাড়া অন্য সময় কেইসের তেমন প্রয়োজন নেই।
তবে প্যাকেজভেদে ক্যামেরাটির সঙ্গে ওয়াটারপ্রুফ কেইস দেয়া হবে। সব মিলিয়ে ডিজাইনে ক্যামেরাটি অনন্য।
কানেক্টিভিটি
ক্ষুদ্রাকৃতির ক্যামেরাটি কোনো ডিভাইস ছাড়া ব্যবহার করা গেলেও সাধারণত সবাই এটি ফোনের সঙ্গে পেয়ার করে থাকেন। এ জন্য এতে রয়েছে ২.৪ গিগাহার্জ ও ৫ গিগাহার্জ ওয়াই-ফাই। নতুন ৫ গিগাহার্জ ওয়াই-ফাইয়ের গতি বেশি হওয়ার ফলে লাইভ রেকর্ডিং করতে ল্যাগ কম পাওয়া যাবে।
প্রয়োজনে রিমোট শাটার বাটনও ক্যামেরাটির সঙ্গে ব্যবহার করা সম্ভব। এ কাজ করতে ব্লুটুথের মাধ্যমে রিমোট পেয়ার করে নিতে হবে।
ভিডিও ও ছবির মান
ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্সের ক্যামেরাটিতে রয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেল, f/2.8 অ্যাপার্চারের সেন্সর। এর মাধ্যমে ২১৬০ পিক্সেল, অর্থাৎ ফোরকে রেজুলেশনে ভিডিও ধারণ করা গেলেও মাত্র ২০ এফপিএস গতিতে ধারণ ও প্রচুর ফ্রেম বাদ পড়ায় ১৪৪০পিক্সেল বা ২কে রেজুলেশন ব্যবহার করাই শ্রেয়।
স্লো-মোশনের জন্য রয়েছে ১০৮০পিক্সেল ৬০এফপিএস গতিতে ভিডিও ধারণের সুবিধা এবং ছবির জন্য ১৬ মেগাপিক্সেলের পুরোটাই ব্যবহার করা যাবে।
ছবির ও ভিডিওর মান মূল্য হিসেবে খুবই ভালো। অটোফোকাস না থাকায় ও অ্যাপার্চার কিছুটা কম হওয়ার ফলে ছবিতে বোকেহ না পাওয়া গেলেও, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্সের কল্যাণে ছবি বা ভিডিও থেকে দৃশ্যের কোনো অংশই বাদ পড়বে না।
জুম করলে ডিটেইলের ঘাটতিও চোখে পড়বে না। তবে স্বল্প আলোতে ক্যামেরাটি ব্যবহার না করাই ভালো।
ক্যামেরাটির সেন্সরে অপ্টিক্যাল স্ট্যাবিলাইজেশন নেই, যা অ্যাকশন ক্যামেরার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সফটওয়্যার স্ট্যাবিলাইজেশন কাজ চালানোর মত। প্রতিনিয়ত নতুন ফার্মওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে ক্যামেরাটির ফিচার ও ছবির মান বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সাউন্ড কোয়ালিটির দিক থেকেও ক্যামেরাটি চলনসই। বিশেষত বাতাসের শব্দ ও চারপাশের আওয়াজ কাটাতে মাইক্রোফোনগুলো ভালো কাজ করবে। তবে অ্যাকশন ক্যামেরাতে সরাসরি শব্দসহ ভিডিও ধারণ না করাই উত্তম।
সব মিলিয়ে ক্যামেরা হিসেবে মূ্ল্য অনুযায়ী ই-লাইট খুবই কার্যকর।
ব্যাটারি লাইফ
টানা দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ভিডিও ধারণ করার ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যাবে এক চার্জে। প্রয়োজনে একাধিক ব্যাটারি ব্যবহার করাও সম্ভব।
দ্রুত খোলার জন্য ব্যাটারিতে একটি স্ট্র্যাপ যুক্ত করেছে নির্মাতা ই-টেকনলজিস, যা প্রশংসনীয়।
অ্যাপ
ক্যামেরাটি স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের সঙ্গে ব্যবহার করার জন্য ই-স্মার্ট ক্যামেরা অ্যাপটি ব্যবহার করতে হবে।
অ্যাপটির ইন্টারফেইস চমৎকার, ক্যামেরার সঙ্গে সংযুক্ত করার উপায়টিও সহজ। যদিও সরাসরি ফোনে ভিডিও ধারণ করার প্রক্রিয়াটি জটিল। তাই অ্যাপটি ক্যামেরা থেকে ভিডিও ট্রান্সফার ও শাটার হিসেবে ব্যবহার করাই উত্তম।
পরিশেষ
যারা বাজেটের মধ্যে একটি অ্যাকশন ক্যামেরা খুঁজছেন তাদের জন্য ই-লাইট খুবই কাজের।
মূল্য
বাজারে ওয়াটারপ্রুফ কেইসসহ অ্যাকশন ক্যামেরাটি পাওয়া যাচ্ছে ১৫ হাজার টাকায়।
এক নজরে ভালো
এক নজরে খারাপ
রিভিউটি করেছেন টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর এস এম তাহমিদ